1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কর্তৃত্ব বাড়ল রওশনের

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১১ এপ্রিল ২০১৪

জাতীয় পার্টির মহাসচিব পদ থেকে রহুল আমীন হাওলাদারকে বাদ দিয়ে জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুকে মহাসচিব করায় দলে রওশন এরশাদের কর্তৃত্ব আরো বেড়েছে বলে মনে করছেন অনেকে৷ যদিও এরশাদের দাবি, দলকে ঐক্যবদ্ধ করতেই এ সিদ্ধান্ত৷

https://p.dw.com/p/1BgS7
ছবি: STR/AFP/Getty Images

৫ই জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই জাতীয় পার্টিতে দলের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদের অবস্থান শক্ত হয়৷ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ শেষ পর্যন্ত রাজি না থাকলেও, রওশনের কাছে তিনি হার মানেন৷ জাতীয় পার্টি নির্বাচনে যায় এবং ৩৪ জন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন৷ স্বামী-স্ত্রী, অর্থাৎ এরশাদ এবং রওশনের দ্বন্দ্বে দলের নেতারাও দুই ভাগ হয়ে যান৷

নির্বাচনের পর রওশনের ক্ষমতা আরো সংহত হয়৷ কারণ তাঁর ওপরে রয়েছে সরকারের সরাসরি আশীর্বাদ৷ এছাড়া বিরোধী দলে থেকেও দল থেকে যাঁরা সরকারের মন্ত্রী বা উপদেষ্টা হয়েছেন, তাঁরাও রওশনেরই লোক৷ রওশন এরশাদ হয়েছেন বিরোধী দলীয় নেত্রী আর এশাদকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হতে হয়েছে৷

এমনকি শেষ পর্যন্ত এরশাদকে বাদ দিয়ে রওশনের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির কাজও এগিয়ে চলছিল৷ জাতীয় পার্টিতে রওশনের ঘনিষ্ট একজন নেতা জানান, এই যাত্রায় এরশাদ নিজেকে বাঁচাতে রওশনের সঙ্গে সমঝোতায় এসেছেন৷ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পদ নির্বিঘ্ন করতে এরশাদ তাই রওশনের চাপে জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুকে মহাসচিব করেছেন৷ বাদ দিয়েছেন ১৪ বছর ধরে তাঁর অনুগত রহুল আমীন হাওলাদারকে৷ বলা বাহুল্য, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু রওশনের তো বটেই সরকারেরও ঘনিষ্ঠ৷

Bangladesch Hussain Muhammad Ershad in Dhaka
ছবি: STR/AFP/Getty Images

বৃহস্পতিবার রাতে বাদ পড়ার পর রহুল আমীন হাওলাদার সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘‘দলের চেয়ারম্যানের ওপর চাপ প্রয়োগ করেই এই পরিবর্তন আনা হয়েছে৷ আমাকে এই পদ থেকে সরানোর জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে সম্পদের হিসাব চাওয়াসহ নানা নাটক সাজানো হয়৷ দলের একটি চক্র এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত৷ তাঁরাই এটা করেছেন৷'' তিনি যত দ্রুত সম্ভব সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি পরিষ্কার করবেন বলেও জানান৷

তবে এরশাদ শুক্রবার দাবি করেন যে, কোনো চাপের মুখে নয়, দলের স্বার্থেই মহাসচিব পদে পরিবর্তন আনা হয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার ও রওশনের মধ্যে দূরত্ব আছে বলে জনগণ ও দলের নেতা-কর্মীরা মনে করেন৷ নতুন মহাসচিব নিয়োগের ফলে এ ধারণা দূর হবে৷ এখন সবাই মনে করবে আমরা এক৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘আমার মনে হয় এ সরকার পাঁচ বছরই থাকবে৷ তাই পার্টিকে সংগঠিত করা দরকার৷ এর জন্য তরুণ নেতৃত্ব দরকার৷ বাবলু পাশে থাকলে আমরা ভালো করবো৷''

জাতীয় পার্টির নতুন মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুও দাবি করেন, ‘‘কারও চাপে নয়, দলের চেয়ারম্যান মনে করেছেন, তাই তাঁকে মহাসচিব পদে নিয়োগ দিয়েছেন৷''

সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণেই তাঁকে এই পদে দেওয়া হলো কিনা জানতে চাইলে জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বিষয়টি নাকচ করে বলেন, ‘‘আমাকে পার্টির চেয়ারম্যান ভালো করে জানেন৷ এ কারণেই তিনি আমাকে এ দায়িত্ব দিয়েছেন৷ কারও চাপে আমাকে মহাসচিব করা হয়নি৷''

জাতীয় পার্টির নতুন এই মহাসচিব বলেন, তিনি তৃণমূল পর্যায় থেকে দলকে শুধু সংগঠিতই করবেন না, দলকে ক্ষমতার কাছাকাছিও নিয়ে যাবেন৷

৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে রওশন এরশাদের প্রধান দুই সহযোগী হলেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং জিয়াউদ্দিন আহেমেদ বাবলু৷ তাঁরা সরকারেরও খুব ঘনিষ্ঠ৷ জানা গেছে, সরকারও চায় না যে জাতীয় পার্টির মূল নেতৃত্বে সরকার বিরোধী কেউ থাকুক৷ তাই রহুল আমীন হাওলাদারের বিদায়ের মধ্য দিয়ে এরশাদকে পুরোপুরি নির্বিষ করা হলো বলে মনে করেন দলের অনেক নেতা৷ রওশন এরশাদের ঘনিষ্ট জাপা নেতা ইয়াহিয়া চৌধুরী এমপি ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘এখন দলে আর কোনো বিভেদ নেই৷ সবাই এক হয়ে কাজ করবেন৷ এরশাদ আর রওশনের মধ্যেও কোনো দূরত্ব নেই৷''

দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের কাছে বিষয়টি কাছে জানতে চাইলে এ নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি৷ ব্যস্ততার অজুহাতে প্রসঙ্গটি এড়িয়ে যান তিনি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য