1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জাতিসংঘের দূত

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৯ ডিসেম্বর ২০১৩

জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো বাংলাদেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সমঝোতার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন৷ এজন্য তিনি দফায় দফায় বৈঠক করছেন নির্বাচন সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে৷

https://p.dw.com/p/1AVRI
Bangladesch Parlament Gebäude in Dhaka
ছবি: AP

ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরাও নিজেদের মধ্যে বৈঠক করছেন৷ এই পর্যায়ে সোমবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বৈঠকের পর তারানকো সমঝোতার ব্যাপারে আশাবাদীও হয়ে উঠেছেন৷

রবিবার প্রথম দফা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত ও সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো৷ সোমবার দ্বিতীয় দফা বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর ছাড় দেয়ার মানসিকতা থাকলে বর্তমান সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব৷ নির্বাচন কমিশন তারানকোকে বলেছে যদি রাজনৈতিক সমঝোতা হয় তাহলে তারাও নির্বাচনের তফশিল পরিবর্তন করতে পারবেন৷ তবে এজন্য সময় হাতে খুব কম৷ প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেছেন নির্বাচন পিছিয়ে সমঝোতার চেষ্টা নয়, সমঝোতা হলে নির্বাচন পেছানো যাবে৷

তারানকো ঢাকায় আসেন শুক্রবার রাতে৷ এরপর শনি ও রবিবার তিনি প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেত্রী, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন৷ প্রধান দুই দলের অন্যান্য নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি৷ এমনকি নেতাদের সঙ্গে একাধিক অনির্ধারিত বৈঠকও করেছেন তিনি৷

এসব বৈঠকে তারানকো সংকটের মূল কোথায় এবং সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে তা সমাধানের সুযোগ আছে কিনা তা জানার চেষ্টা করেছেন৷ জানা গেছে, তারানকো যে বিষয়টি এখন বুঝতে পেরেছেন তা হলো নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান একজন নির্দলীয় নিরপেক্ষ ব্যক্তি হলেই সব দল নির্বাচনে আসবে৷ আর এ নিয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে কয়েকদফা আলোচনা করে দূরত্ব কমিয়ে আনার চেষ্টা চালান তিনি৷

নির্বাচন কমিশনের অবস্থানও বোঝার চেষ্টা করছেন তারানকো৷ তাই দ্বিতীয় দফা বৈঠকে তিনি কিছুটা আশাবাদী হয়ে উঠেছেন৷ কারণ নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচনের তফশিল পরিবর্তনে রাজি৷ তবে সেই সমঝোতা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে না হলে নির্বাচনের তফশিল পরিবর্তন কঠিন হবে৷

তবে তারানকো আশাবাদী হলেও মূল জায়গায় বিরোধ এখনো রয়ে গেছে৷ আওয়ামী লীগ সংবিধান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকারের ব্যাপারে অনড় রয়েছে৷ আর বিএনপি শেখ হাসিনাকে বাদ দেয়া ছাড়া নির্বাচনে যেতে রাজি হচ্ছে না৷ এই অবস্থায় আরো কি বিকল্প আছে তা নিয়েও কথা হচ্ছে৷ জানা গেছে নির্বাচনকালীন সরকারে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী ক্ষমতা কমিয়ে অন্য কোনো উপায়ে নির্বাচন করা যায় কিনা তাও আলোচনায় আছে৷

এদিকে বিএনপি, জাতীয় পার্টি এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা আগে একতরফা নির্বাচন বন্ধ করে তারপর সংকট নিরসনে আলাপ আলোচনার কথা বললেও তাতে সায় নেই আওয়ামী লীগ ও নির্বাচন কমিশনের৷

সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন-এর সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, তিনিও মনে করেন প্রধান দুই রাজনৈতিক দল যদি কিছুটা ছাড় দেয় তাহলে সংকটের সমাধান সম্ভব৷ তবে তিনি মনে করেন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো ছাড় দেয়ার মানসিকতা তৈরি হয়েছে বলে তার মনে হয় না৷ তারানকোর সঙ্গে বদিউল আলম মজুমদারের বৈঠক হয়েছে৷ তাতে তিনি বুঝতে পেরেছেন জাতিসংঘ আন্তরিকভাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের সমাধান চাইছে৷ তাদের লক্ষ্য হলো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি পথ বের করা৷ আর এজন্য তারানকো একই বিষয় নিয়ে একই ব্যক্তি, দল বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলছেন৷ বদিউল আলম মজুমদারের মতে, তারানকো মূলত তাঁর সফরে একটি বহুপক্ষীয় সংলাপ চালাচ্ছেন৷ তিনি সবার সঙ্গে কথা বলে দূরত্ব কমিয়ে এনে হয়তো তাঁর কোনো প্রস্তাব দিতে পারেন৷

এদিকে তারানকো নিজে কূটনীতিকিদের সঙ্গে ফাঁকে ফাঁকে বৈঠক করছেন৷ আবার বিদেশি কূটনীতিকরা নিজেদের মধ্যেও বারবার বৈঠক করছেন৷ এই বৈঠক হচ্ছে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক৷ কূটনীতিকরা তারানকোর আপ্রাণ চেষ্টাকে সাইডলাইন থেকে সফল করার জন্য কাজ করছেন বলে জানা গেছে৷

মঙ্গলবার তারানকোর বাংলাদেশ সফর শেষ হবে৷ বাংলাদেশ ছাড়ার আগে তিনি সংবাদ সম্মেলনে তাঁর মতামত তুলে ধরবেন৷ জানা গেছে বাংলাদেশে অবস্থানের শেষ সময় পর্যন্ত তারানকো রাজনৈতিক সংকট নিরসনে তাঁর চেষ্টা অব্যাহত রাখবেন৷

এদিকে বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধী ১৮ দলীয় জোট অবরোধ শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে৷ মঙ্গলবার সকালে এই অবেরোধ শেষ হওয়ার কথা ছিল৷ বিএনপির মুখপাত্র সালাউদ্দিন আহমেদ অজ্ঞাত স্থান থেকে ভিডিও বার্তায় অবরোধ বাড়ানোর ঘোষণা দেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য