1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চ্যালেঞ্জের মুখে এশিয়ার এয়ারলাইন্স শিল্প

হাফসা হোসাইন২৬ আগস্ট ২০০৮

এক বছরে এক লাফে জ্বালানী তেলের দাম প্রায় দ্বিগুণ হওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতিতে৷ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে এশিয়ার উদীয়মান এয়ারলাইন্স শিল্প৷ ব্যবসায় ধস ঠেকাতে নতুন নতুন পদক্ষেপও নিচ্ছে এয়ারলাইন্সগুলো৷

https://p.dw.com/p/F4vn
চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে এশিয়ার উদীয়মান এয়ারলাইন্স শিল্পছবি: AP

এক সময় বলা হতো, কোন কিছুতেই দমবে না এশিয়ার উদীয়মান এয়ারলাইন্স ব্যবসা৷ এগারই সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলা, ইন্দোনেশিয়ার পযর্টন স্বর্গ বালি দ্বীপে বোমা, সার্স ভাইরাসের উপদ্রব, টিকিটের দাম বৃদ্ধি এমনকি ২০০৪ এ স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ সুনামি কোন কিছুতেই খুব বেশিদিন থমকে থাকেনি এশিয়ান এয়ারলাইন্সগুলো৷

Airbus A380 Singapore Airlines
খরচ বাঁচাতে গিয়ে কমিয়ে দেয়া হচ্ছে ইন ফ্লাইট সেবাছবি: AP

তবে এবার তেলের দামে লাগামহীন ঊর্ধগতি আর বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দাভাবের কারণে এয়ারলাইন্স শিল্পে চলছে দুর্যোগ৷ সত্যটি স্বীকার করে নিলেন খোদ অ্যাসোসিয়েশন অব এশিয়া প্যাসিফিক এয়ারলাইন্সের মহাপরিচালক এন্ড্রু হার্ডম্যান৷

গত বছরের চেয়ে এ বছর তেলের দাম ব্যারেল প্রতি বেড়েছে গড়ে ৭৩ ডলার৷ চলতি বছরের মাঝামাঝিতে এই দাম ছিল দেড়শ ডলার ছুঁই ছুঁই৷ আর তারই চড়া মাশুল গুণছে এশিয়ার এয়ারলাইন্সহগুলো৷ এ বছর তাদের খরচ বেড়েছে ৪৫ ভাগ৷ ২০০৮ এর প্রথমভাগেই প্রায় ২৮ কোটি ডলার লোকসান হয়েছে থাই এয়ারওয়েজের৷ ৫ বছর রমরমা ব্যবসার পর লোকসান ঠেকাতে ফ্লাইট সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে চীন৷ এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সাড়ে ১৫ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যবসা সফল বিমান সংস্থা সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের৷ ভারতে এই জুলাইতে যাত্রীসংখ্যা কমেছে ১৩ শতাংশ৷ দেশটির বড় ৩টি বিমানসংস্থা এ বছর মোট গচ্ছা দিয়েছে প্রায় ৯৪ কোটি ডলার৷ তাদের আশংকা, চলতি অর্থবছর ভারতের এয়ারলাইন্স শিল্পের মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২শ কোটি ডলার৷ যা গোটা বিশ্বের এভিয়েশন ব্যবসার ক্ষতির ৩ ভাগের এক ভাগ৷

এ অবস্থায় কোন কোন দেশে বিমান যাত্রীর সংখ্যা বাড়লেও এয়ারলাইন্সগুলো দেখছে না লাভের মুখ৷ টিকে থাকতে তাই বাধ্য হয়েই নানা উপায় খুঁজছে বিমান সংস্থাগুলো৷ বাড়ানো হচ্ছে বিমান ভাড়া৷ কর্মী ছাঁটাই করছে কেউ কেউ৷ আবার কম লাভজনক রুটে ফ্লাইট কমিয়ে দিয়েছে কোন কোন সংস্থা৷

Airbus A380 Singapore Airlines im Betrieb Flughafen in Singapur
ক্রমেই বাড়তে থাকা তেলের দামের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এশিয়ার বিমান সংস্থাগুলো কতটুকু সফল হবে তাই এখন দেখার বিষয়ছবি: AP

প্যাসিফিক এশিয়া ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশনের গবেষণায় দেখা গেছে, বিমান সংস্থাগুলো ফ্লাইট কমিয়ে দেয়ায় আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে বিমানবন্দর এবং হোটেলব্যবসারও৷

তেলের খরচ বাঁচাতে এবার বিমানের ওজন কমাতে মনোযোগ দিচ্ছে বিমান সংস্থাগুলো৷ লাঞ্চে দেয়া হচ্ছে হাল্কা খাবার৷ ওয়াইন, বিয়ার, কোমল পানীয় এমনকি স্রেফ পানির পরিমাণও অল্প৷ শুধু হাল্কা চামচ দিয়েই প্রতি ফ্লাইটে আড়াই কেজি ওজন কমাচ্ছে জাপান এয়ারলাইন্স৷ আর তাদের কার্গো শাখায় গ্লাস ফাইবার কন্টেইনার ব্যবহারের কারণে ওজন বাঁচছে ২৬ কেজি করে৷

জাপানের অল নিপ্পন এয়ারওয়েজের কৌশলটিও বেশ৷ কার্বন ফাইবারের ছোট আসন বানিয়ে বছরে একেকটি ফ্লাইটে ৪০ হাজার লিটার তেল বাঁচানোর পদক্ষেপ নিয়েছে তারা৷ ওজন কমাতে অল্প পাতার ম্যাগাজিন রাখা হচ্ছে বিমানে৷ পড়ুয়াদের এতে বিরক্ত হবারই কথা!

এসব কৌশলের সাথে নতুন বিষয় যোগ করেছে ভারতের কিংফিশার৷ এরা ওয়াশরুমের জন্য ট্যাংকেই পানি তুলছে কম৷

তবে ক্রমেই বাড়তে থাকা তেলের দামের এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এশিয়ার বিমান সংস্থাগুলো কতটুকু সফল হবে তাই এখন দেখার বিষয়৷