1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চেরনোবিল দুর্ঘটনার ২৫ বছর পূর্তি

২৬ এপ্রিল ২০১১

রাশিয়া ও ইউক্রেনের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতারা ২৫ বছর আগে চেরনোবিল পরমাণু কেন্দ্রের দুর্ঘটনার কথা স্মরণ করলেন৷ জাপানের ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্রে সাম্প্রতিক বিপর্যয়ের পর ঘটনাটির তাৎপর্য আরও বেড়ে গেছে৷

https://p.dw.com/p/113z4
ভয়াবহ দুর্ঘটনার কথা স্মরণ করছেন ইউক্রেনবাসীছবি: AP

সোমবার রাত ঠিক একটা বেজে তেইশ মিনিটে চার্চের ঘন্টার শব্দে ২৫ বছর আগের সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার স্মৃতি জেগে উঠেছিল৷ চেরনোবিলের ৪ নম্বর চুল্লিতে ঘটেছিল বিস্ফোরণ৷ ঘণ্টাও বাজে ঠিক ২৫ বার৷ মঙ্গলবার ভোরে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে এক স্মৃতিশৌধে রুশ অর্থডক্স চার্চের শীর্ষ ধর্মীয় নেতা প্যাট্রিয়ার্ক কিরিল এক প্রার্থনাসভার নেতৃত্ব দেন৷ সেখানে উপস্থিত ছিলেন ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী মিকোলা আজারভ৷ কিরিল বলেন, চেরনোবিলে যা ঘটেছিল, গোটা বিশ্ব এর আগে যুদ্ধ ছাড়া তেমন বিপর্যয় দেখে নি৷ হিরোশিমায় মার্কিন পরমাণু বোমা হামলায় যে ক্ষতি হয়েছিল, চেরনোবিলের ঘটনায় তার তুলনায় ৫০০ গুণ ক্ষতি হয়েছে৷

Gedenken 2011 Katastrophe von Tschernobyl
কিয়েভের গির্জায় মৃতদের কথা স্মরণ করছেন এক নারীছবি: AP

এর পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ চেরনোবিলে পৌঁছান৷ প্রথমে তাঁরা পরমাণু কেন্দ্রে পুষ্পস্তবক রাখেন, তারপর স্থানীয় এক গির্জায় আয়োজিত স্মরণসভায় অংশ নেন৷ মেদভেদেভ গোটা বিশ্বে পরমাণু কেন্দ্রের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড স্থির করার আহ্বান জানান৷ তাছাড়া চেরনোবিলের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে তিনি বলেন, বিপর্যয় ঘটলে সরকারের সত্য গোপন করা উচিত নয়৷

১৯৮৬ সালের ২৬শে এপ্রিল ভোরের দিকে কর্মীরা চেরনোবিল পরমাণু কেন্দ্রের ৪ নম্বর চুল্লিতে কিছু পরীক্ষা চালাচ্ছিলেন৷ সেই কাজে কিছু ত্রুটি হয়েছিল৷ সেইসঙ্গে চুল্লির নক্সায়ও কিছু দুর্বলতা ছিল৷ ফলে একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটতে থাকে৷ বিস্ফোরণের ফলে চুল্লির ধ্বংসাবশেষের মারাত্মক তেজস্ক্রিয় উপাদান চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে৷ প্রতিবেশী বেলারুশ ও রুশ প্রজাতন্ত্র থেকে শুরু করে জার্মানি সহ পশ্চিম ইউরোপের বিস্তীর্ণ এলাকায় তেজস্ক্রিয়তার কুপ্রভাব ধরা পড়ে৷ দুর্ঘটনার ফলে পরমাণু কেন্দ্রের দুই কর্মীর অবিলম্বে মৃত্যু হয়৷ ঘটনার পরের কয়েক মাসে ২৮ জন কর্মী ও উদ্ধারকর্মী মারা যান৷ সংলগ্ন এলাকার হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়া হয়৷ তবে তৎকালীন সোভিয়েত কর্তৃপক্ষ প্রথম তিন দিন ঘটনাটি গোপন রাখার চেষ্টা করেছিল৷ তারপর ১৯৮৬ ও ১৯৮৭ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন চেরনোবিল ও সংলগ্ন এলাকা তেজস্ক্রিয়তা মুক্ত করতে ৪ লক্ষেরও বেশি উদ্ধারকর্মী পাঠায়৷ তাদের মধ্যে অনেকে এই কাজের বিপদ সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন ছিল না৷

Gedenken 2011 Katastrophe von Tschernobyl
সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরে ২৫টি ফানুস উড়িয়ে স্মরণ করা হলো চেরনোবিল দুর্ঘটনার কথাছবি: AP

চেরনোবিল দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব নিয়ে আজও বিতর্ক শেষ হয় নি৷ এমনকি জাতিসংঘের একাধিক সংস্থাও মৃতের সংখ্যা নিয়ে ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারে নি৷ তারপর ২০০৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও জাতিসংঘ জানায়, চেরনোবিলের তেজস্ক্রিয় বিকিরণের ফলে সম্ভবত ৪,০০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে৷ কিন্তু ঘটনার বহু বছর পরও থাইরয়েড ক্যান্সার সহ তেজস্ক্রিয়তা জনিত অনেক অস্বাভাবিক শারীরিক ও মানসিক সমস্যার ঘটনা ধরা পড়েছে৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য