1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চীনের নতুন নেতৃত্ব

উহান ঝু / এসি৫ মার্চ ২০১৩

হু জিনতাও এবং ওয়েন জিয়াবাও গেলেন বটে, কিন্তু সমস্যাগুলো থেকে গেল৷ ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান, পরিবেশের হাঁড়ির হাল, কমিউনিস্ট পার্টির শাসনের ক্ষীয়মাণ বৈধতা৷ সব মিলিয়ে নতুন নেতৃত্বের মাথাব্যথার কোনো কমতি নেই৷

https://p.dw.com/p/17qBp
ছবি: Reuters

চীনের সমস্যাগুলো যেন বোলতার চাপা গুঞ্জনের মতো৷ মাঝে মাঝে সেগুলো সদলে বেরিয়ে আসে, যেমন জাতীয় গণ কংগ্রেসের স্বল্প আগে ইন্টারনেটে একটি খোলা চিঠি প্রকাশিত হয়, যাতে শতাধিক বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও আইনজীবীদের স্বাক্ষর ছিল৷

চিঠিতে বলা হয়েছে: ‘‘আমরা নাগরিক হিসেবে জাতীয় গণ কংগ্রেসের স্থায়ী পরিষদের প্রতি আন্তরিক ও মুক্ত আবেদন জানাচ্ছি, যাতে তাঁরা চীনে মানবাধিকার ও সাংবিধানিকতার সুরক্ষা বৃদ্ধির জন্য নাগরিক অধিকার ও রাজনৈতিক অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তিটি অনুমোদন করেন৷''

চীন জাতিসংঘের ঐ চুক্তিটি ১৯৯৮ সালে স্বাক্ষর করলেও গণ কংগ্রেস এ যাবৎ তা অনুমোদন করেনি৷ বলতে কি, চীন ঐ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল শুধুমাত্র বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা ডাবলিউটিও'তে যোগদানের আশায়৷ ডয়চে ভেলে'কে এ'কথা বলেন বেইজিং'এর কিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক উ কিয়াং, যিনি ঐ খোলা চিঠির স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে ছিলেন৷

তারপর দশ বছর কেটে যাওয়া সত্ত্বেও যে চুক্তিটি অনুমোদিত হয়নি, সেটা চীনা নেতৃত্বের গড়িমসি ও তাদের রক্ষণশীল মনোবৃত্তির পরিচায়ক, বলে উ কিয়াং মনে করেন৷ কেননা জাতিসংঘের ঐ চুক্তিতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সভাসিমিতি করার স্বাধীনতা ও অপরাপর রাজনৈতিক অধিকারের গ্যারান্টি দেওয়া হয়েছে, যেগুলো চীনে নিত্যনৈমিত্তিক লঙ্ঘন করা হয়ে থাকে৷

Bildergalerie China Volkskongress Abstimmung
ছবি: Getty Images

এবং এটাই একমাত্র খোলা চিঠি নয়৷ গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে ১৪০ জনের বেশি নোবেল পুরস্কার বিজয়ী লিউ শিয়াওবো'র মুক্তি দাবি করেছেন৷ বিশিষ্ট ‘ডিসিডেন্ট' বা ভিন্নমতাবলম্বী লিউ শিয়াওবো ২০১০ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন৷ কিন্তু দৃশ্যতঃ ‘‘রাষ্ট্র্রের ক্ষমতাহানির'' প্রচেষ্টার দরুন তাঁকে ২০০৯ সাল থেকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে৷ ১১ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন লিউ শিয়াওবো৷

বেইজিং'এর নয়া নেতৃত্বের কাছে বৃহত্তম সমস্যা হল: এই সব বিভিন্ন সমস্যার যুগপৎ মোকাবিলা করা৷ জার্মান চীনা বিশেষজ্ঞ এবারহার্ড জান্ডস্নাইডারের মতে, মূল সমস্যাটা হল, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা৷ যা খুব সহজ কাজ নয়৷

বিগত ৩০ বছরে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি তাদের শাসনের বৈধতার অনেকটাই পেয়েছে অর্থনৈতিক প্রগতি থেকে৷ জনসাধারণের একটি ব্যাপক অংশ ঐ অর্থনৈতিক প্রগতি থেকে লাভবান হয়েছে৷ কিন্তু ইতিমধ্যে ধনী-দরিদ্রের মধ্যে ব্যবধান ক্রমেই আরো বেড়ে যাচ্ছে৷ রাজনৈতিক ক্ষমতা, দুর্নীতি ও শিল্প-বাণিজ্যের কাপ্তানদের মধ্যে সংযোগ মানুষের মধ্যে ক্রমেই আরো বেশি অসন্তোষ ও ক্রোধের সৃষ্টি করছে৷ ভীতিকর পরিবেশ দূষণ ও অপর্যাপ্ত খাদ্য নিরাপত্তা নয়া মধ্যবিত্তদেরও চিন্তায় ফেলছে, যদিও তারাই অর্থনৈতিক প্রগতি থেকে এযাবৎ সবচেয়ে লাভবান হয়েছে৷

শি চিনপিং গত নভেম্বরে পার্টি প্রধান নির্ধারিত হবার পর সম্ভবত আগামী ১৪ই মার্চ গণ কংগ্রেসে রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত হবেন এবং অবশেষে তাঁর পূর্বসূরি হু জিনতাও'এর স্থলাভিষিক্ত হবেন৷ এই চার মাসে শি চিনপিং একাধিকবার দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন৷ কিন্তু একমাত্র রাজনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমেই চূড়ান্তভাবে দুর্নীতি দূর করা সম্ভব৷ অথচ এ যাবৎ রাজনৈতিক সংস্কার কিংবা তার সামান্যতম আগ্রহের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷ কাজেই চীনে এখন পশ্চিমি ধরনের গণতন্ত্রের পরিবর্তে স্থায়িত্ব এবং স্থিতিশীলতার খোঁজ চলবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য