1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চলচ্চিত্র অনুরাগী ট্যুরিস্টদের আকর্ষণ করতে বার্লিনের ফিল্ম ট্যুর

৪ মে ২০১১

রাজধানী বার্লিনে পর্যটন হচ্ছে এক নম্বর শিল্প খাত৷ প্রতি বছর প্রায় ৯০ লক্ষ মানুষ বার্লিনে বেড়াতে যায়৷ এবার চলচ্চিত্র অনুরাগীদের জন্য চালু হয়েছে দু’ঘন্টার মাল্টিমিডিয়া, ভিডিও বাসট্যুর৷

https://p.dw.com/p/118W0
ব্রান্ডেনবুর্গ গেটছবি: Fotolia/Stephen Finn

আশা করা হচ্ছে এ বছর বার্লিনে পর্যটকদের সংখ্যা আরো বাড়বে৷ পর্যটকদের আকর্ষণ করতে বহু কোম্পানির রয়েছে সাইটসিইং বাস সার্ভিস৷ ব্রান্ডেনবুর্গ গেট, পার্লামেন্ট ভবন, বার্লিন প্রাচীরের কিছু অংশ, একের পর এক মিউজিয়ম কোন কিছুই বাদ যায়না এই সব ট্যুরে৷ এবার চলচ্চিত্র অনুরাগীদের জন্য চালু হয়েছে ফিল্মট্যুর৷ দেখানো হচ্ছে বিখ্যাত সব শ্যুটিং-এর জায়গাগুলো৷

এগিয়ে আসছে গ্রীষ্মকাল৷ বার্লিন হয়ে উঠছে রমরমা৷ যেদিকেই তাকানো যায় শুধু ট্যুরিস্ট৷ ব্রান্ডেনবুর্গ গেট, উন্টার ডেন লিন্ডেন, বার্লিন প্রাচীর – এসব জায়গাতেই ভীড় সবচেয়ে বেশি৷ আর পর্যটকদের আকর্ষণ করতে বার্লিনের রাস্তায় চলেছে বিভিন্ন ট্যুরিস্ট বাস৷ ইতিহাস বিজড়িত প্রতিটি জায়গায় বাস থামছে৷ অনেকে নেমে যাচ্ছে৷ অনেকেই উঠছে৷ একদিনের টিকিট কিনে নিলে যে কোন ট্যুরিজমের বাসে ওঠা যাবে৷ বেশ কয়েকটি বাসে আবার ভিডিও করার সুযোগ রয়েছে৷ বলা হচ্ছে ভিডিও বাস ট্যুর৷

অতীতে বার্লিন শহরকে কেন্দ্র করে অনেক চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে৷ দেশি-বিদেশি সব ধরণের ছবিতে বার্লিনকে দেখা গেছে৷ আর একারণেই এই ফিল্ম ট্যুর এনেছেন বার্লিন সিনেমা হেরিটেজের সহ প্রতিষ্ঠাতা আর্নে ক্রাস্টিং৷

এই ফিল্ম ট্যুরের দৈর্ঘ দুই ঘন্টা৷ বিশেষ বিশেষ স্থানে ভিডিও ট্যুর বাসটি থামবে৷ আর্নে প্রতিটি জায়গার বর্ণনা দেবেন৷ চলচ্চিত্র ইতিহাসের কথা বলবেন৷ কবে, কোন ছবির শ্যুটিং চলেছে তা জানাবেন৷ যেমন বর্লিনের আলেকজান্ডার প্লাৎস জায়গায়টি কেন বিখ্যাত? ১৯৩১ সালে সেখানে পরিচালক পিল ইয়ুটসির ‘বার্লিন আলেকজান্ডার প্লাৎস' ছবির শ্যুটিং হয়েছিল৷

Berlinale Polen Wojciech Staron Beste Kamera
চলচ্চিত্র উৎসব বার্লিনালেছবি: DW

বার্লিনের এই ফিল্ম ট্যুর প্রসঙ্গে আর্নে ক্রাস্টিং বললেন,‘‘আমরা এই ফিল্ম ট্যুরের আয়োজন করেছি কারণ আমার মনে হয়ে বার্লিন চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত৷ আর একারণেই ট্যুরটি অসম্ভব জনপ্রিয়তা পেয়েছে৷ আমরা এমন কিছু জায়গা দেখাচ্ছি যেখানে সাধারণত কোন পর্যটক যাবে না কারণ তারা বার্লিনের চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে পরিচিত নয়৷''

কোন কোন ছবির শ্যুটিং হয়েছিল বার্লিনে? ২০০৪ সালে নতুন করে নির্মিত হয়েছিল ‘অ্যারাউন্ড দ্যা ওয়ার্লড ইন এইটি ডেজ' ছবি৷ এবং সেজন্য বার্লিনের জেন্দারমেন মার্কেট এলাকাটি সাজানো হয়েছিল ভিক্টোরিয়ান লন্ডনের আদলে৷ দুই অস্কারজয়ী জার্মান ছবি ‘গুডবাই লেনি' আর ‘দ্য লাইভস অফ আদার্স' এর শ্যুটিং হয়েছিল জার্মানির পূর্বাঞ্চলের যেসব জায়গায়, সেগুলোও মাল্টিমিডিয়া ট্যুরের অন্তর্ভুক্ত৷ ১৯৬১ সালে বিলি ওয়াইল্ডারের কমেডি ছবি ওয়ান, টু, থ্রি-র স্যুটিং-এর ব্যাঘাত ঘটিয়েছিল বার্লিন প্রাচীর৷ তবে আর্নে ক্রাস্টিং জানান প্রতিনিয়ত ট্যুরের জায়গার পরিবর্তন হচ্ছে কারণ প্রতি মুহূর্তে বার্লিনেরও পরিবর্তন ঘটছে৷ ক্রাস্টিং আরো জানান,‘‘প্রতি মুহূর্তে ট্যুরের স্থান পরিবর্তন হচ্ছে কারণ সবসময়ই নতুন কোন জায়গায় আমরা যাচ্ছি৷ এমন একটি দিনও যায়নি যেদিন কোথাও কোন না কোন শ্যুটিং ক্রুর সঙ্গে আমাদের দেখা হয়নি৷ রাস্তায় নয়তো কোন মাঠে সবসময়ই স্যুটিং চলছে৷ প্রোডাকশনের কাজ চলছে৷ তবে আমার প্রিয় ছবি হল ‘উইংস অফ ডিজায়ার' অথবা ‘রান লোলা রান'৷ ছবিটির শ্যুটিং হয়েছিল বার্লিনে৷ ছবিতে নায়ক-নায়িকাদের পাশাপাশি বার্লিন শহরকে দেখা গেছে৷ বার্লিনও অভিনয় করেছে৷''

যারা এই ফিল্ম ট্যুরে অংশগ্রহণ করেছেন তারা কী বলবেন? এক ভদ্রলোক বললেন, ‘‘আমি মনে করি এধরণের ট্যুর একেবারে নতুন৷ পুরোপুরি ভিন্ন৷ ছবি বা চলচ্চিত্র জগত সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যায়৷ শহরটি ছবির জগতে কোন ধরণের ভূমিকা রেখেছে তার একটি স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়৷''

একজন মহিলার ভাষ্য,‘‘আমি এই প্রথম বার্লিনে এলাম৷ আমি জানতামই না এখানে এধরণের আকর্ষণীয় ট্যুরের ব্যবস্থা রয়েছে৷ আমার দারুণ লাগছে কারণ আমি জানি হলিউড অভিনেতা টম ক্রুজ এখানে একটি ছবির শ্যুটিং করেছেন৷ আমি ছবিটি দেখেছি৷ আমার দারুণ লেগেছে৷''

আরেকজন জানালেন,‘‘ট্যুরটি ছিল এক কথায় অসাধারণ! বার্লিন শহরকে ভিন্ন আঙ্গিকে দেখার একটি সুযোগ করে দেয়া হয়েছে এই ট্যুরের মধ্য দিয়ে৷ কত জায়গা দেখার বাকি, কত কিছু জানার বাকি তা এই ট্যুরটি পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছে৷''

আগামী বছর বার্লিন পালন করবে চলচ্চিত্রে বার্লিনের শততম বর্ষ৷ আড়ম্বরপূর্ণ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে স্টুডিও বাবেল্সব্যার্গ৷ তখন এই ফিল্ম ট্যুরে যোগ হবে পটসডাম শহর৷ পর্যটকরা তৈরি হচ্ছেন এখনই৷ আর তাদের উৎসাহ দিচ্ছে বার্লিনের এই ফিল্ম ট্যুর৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক