1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গ্রেনেড মামলায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রভাব

সমীর কুমার দে, ঢাকা ২৪ আগস্ট ২০১৪

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য বিচারে প্রভাব ফেলবে কিনা তা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/1CzgB
ছবি: ISSOUF SANOGO/AFP/Getty Images

জাতীয়তাবাদী আইনজীবীদের নেতা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, বিচারাধীন এই মামলা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যে ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন তা শুধু আদালতকে প্রভাবিত করবে না, মামলার সুষ্ঠু ও ন্যায়বিচার বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে৷

জবাবে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, গ্রেনেড হামলার ঘটনায় জিয়া পরিবারের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিচারে কোনো প্রভাব ফেলবে না, কারণ প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন, তা এ ঘটনার ব্যাপকতা সম্পর্কে বলেছেন৷

গত বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে গ্রেনেড হামলার স্থলে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এক বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে যেভাবে জিয়াউর রহমান জড়িত ছিলেন, ঠিক তেমনি ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তাঁর ছেলে তারেক রহমান এবং ওই সময়ের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা সরাসরি জড়িত ছিলেন৷''

Premierministerin Bangladesch Sheikh Hasina
‘২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও তাঁর ছেলে তারেক রহমান জড়িত ছিলেন’ছবি: picture-alliance/dpa

সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার পরিবারকে ‘খুনি পরিবার' আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘‘সামান্য ক্ষমতার লোভে যারা দেশের মানুষ হত্যা করে, তারা মানুষ নয়, মানুষ নামের পশু৷ এই খুনিদের সম্পর্কে দেশের মানুষকে সজাগ থাকতে হবে৷ এদের কাছ থেকে জাতিকে রক্ষা করতে হবে৷ খুনিদের ঠাঁই এই বাংলার মাটিতে হবে না৷''

প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের জবাবে শুক্রবার এক আলোচনা সভায় অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন গ্রেনেড হামলার বিচারাধীন মামলা নিয়ে জিয়া পরিবারকে জড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এই বক্তব্যে বোঝা যাচ্ছে তারা মামলার মূল আসামিদের আড়াল করতে চাচ্ছে৷'' খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘‘প্রথমে তদন্তের পর এই মামলায় চার্জশিট আদালতে জমা দেয়া হয়৷ এরপর বর্তমান সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আবার অধিকতর তদন্তের নামে তারেক রহমানকে এ মামলায় আসামি করে৷ এ থেকে বোঝা যায়, সরকার সুপরিকল্পিতভাবে মামলাটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে৷ আর বিচারাধীন মামলা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য আদালত অবমাননার শামিল৷ রাষ্ট্রের নির্বাহী প্রধান বিচারাধীন কোনো মামলা নিয়ে বক্তব্য দিলে আদালত প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে৷ শুধু তাই নয়, সুষ্ঠু ও ন্যায়বিচার বিঘ্নিতও হতে পারে৷''

Unrhuhen nach Anschlag in Dhaka August 2004
গ্রেনেড হামলার ঘটনার পরের দিন তৎকালীন বিরোধী কর্মীরা প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করেনছবি: picture-alliance/AP Photo

অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেনের বক্তব্যের জবাবে শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘এশিয়ান সোসাইটি অব ইন্টারন্যাশনাল ল' এর আঞ্চলিক সম্মেলনের উদ্বোধন করে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, ‘‘গ্রেনেড হামলার ঘটনায় জিয়া পরিবারের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিচারে প্রভাব ফেলবে না৷'' তিনি বলেন, ‘‘যে-কোনো সরকারের আমলে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় সরকারের ওপরই পড়ে৷ ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় তৎকালীন সরকারের ভূমিকা ছিল সন্দেহজনক৷ মামলার অন্যতম আসামি তারেক রহমান৷ তাদের (জিয়া পরিবার) যদি এই হামলায় জড়িত না থাকার কোনো বক্তব্য থাকত, তবে তাদের উচিত ছিল বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করা৷''

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন, তা এই ঘটনার ব্যাপকতা সম্পর্কে বলেছেন৷ এ হামলার ঘটনার পরও তৎকালীন সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি৷ এভাবে বিশ্লেষণ করলে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিচারে কোনো প্রভাব ফেলবে না৷''

অপর প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধু হত্যার ঘটনায়ও জিয়া জড়িত ছিলেন৷ তা মামলার যুক্তিতর্কে প্রমাণিত৷ জিয়া মামলা শুরুর আগেই নিহত হয়েছেন, তাই তাঁর আসামি হওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না৷ তাঁর নাম বিচারের শুরুতেই বাদ গেছে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য