1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গ্যাস যুদ্ধ

১৭ জুন ২০১৪

ইউক্রেন পাওনা টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ার পর রাশিয়া গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ায় জটিল আকার ধারণ করেছে গত কয়েক মাস ধরে চলে আসা পূর্ব-পশ্চিম টানাপড়েন৷ এই পরিস্থিতিতে আগামী শীতের কথা ভেবে শঙ্কা প্রকাশ করেছে ইইউ৷

https://p.dw.com/p/1CJFC
সোমবার সকালে ইউক্রেনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় রাশিয়াছবি: picture-alliance/AP Photo

ইউক্রেনের কাছে পাওনা ১৯৫ কোটি ডলার পরিশোধের জন্য কিয়েভকে সোমবার গ্রিনিচ মান সময় সকাল ৬টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল মস্কো৷ সম্ভাব্য সংকট এড়াতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ-র মধ্যস্থতায় ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে দুই পক্ষ বৈঠকেও বসেছিল৷ কিন্তু কোনো সমঝোতা ছাড়াই সেই আলোচনা শেষ হলে সোমবার সকালে ইউক্রেনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় রাশিয়া৷

রাশিয়ার রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠান গাসপ্রম-এর এক বিবৃতিতে বলা হয়, নির্ধারিত সময়ে বকেয়া পরিশোধ না করায় তারা ইউক্রেনে গ্যাস সরবরাহ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে এনেছে৷ এখন গ্যাস পেতে হলে ইউক্রেনকে আগাম অর্থ পরিশোধ করতে হবে৷ সেই সঙ্গে এই নিশ্চয়তা দিতে হবে যে ইউক্রেনের ওপর দিয়ে ইউরোপের অন্যান্য দেশে পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে কিয়েভ কোনো বাধা দেবে না৷

Symbolbild Russland Ukraine Gas Pipeline
ইউক্রেন সরকার বলছে, গ্যাসের যে মজুদ তাঁদের হাতে রয়েছে, তাতে এখনই বড় কোনো বিপর্যয় তৈরি হচ্ছে নাছবি: Reuters

পাওনা টাকা না দেয়ায় স্টকহোমের সালিসি আদালতে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ৩.৩ বিলিয়ন ইউরোর একটি মামলাও দায়ের করেছে গাসপ্রম৷ জবাবে কিয়েভ কর্তৃপক্ষও একই আদালতে ৪.৪ বিলিয়ন ইউরোর পাল্টা মামলা ঠুকেছে৷

ইউক্রেন সরকার বলছে, গ্যাসের যে মজুদ তাঁদের হাতে রয়েছে, তাতে এখনই বড় কোনো বিপর্যয় তৈরি হচ্ছে না৷ সংকট থেকে উদ্ধার পেতে পশ্চিম ইউরোপের অন্যান্য গ্যাস সরবরাহকারী দেশের দিকে তাকিয়ে আছে তাঁরা৷

ইউক্রেন এতদিন তাদের মোট চাহিদার অর্ধেক গ্যাস রাশিয়ার কাছ থেকেই পাচ্ছিল৷ এছাড়া পুরো ইউরোপে প্রতি বছর যে পরিমাণ জ্বালানি ব্যবহার হয় তার ১৫ শতাংশ ইউক্রেনের ওপর দিয়ে রাশিয়া থেকেই আসে৷ ফলে রাশিয়ার পদক্ষেপ স্বাভাবিকভাবেই ইউরোপীয় ইউনিয়নকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে৷

ইউরোপীয় ইউনিয়নের জ্বালানি বিষয়ক কমিশনার গ্যুন্টার ও্যটিঙার বলেছেন, এই মুহূর্তে ইউক্রেনের হাতে গ্যাসের যে মজুদ আছে, তাতে মাস তিনেক চলতে পারে৷ কাজেই আগামী সপ্তাহেই হয়ত ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর কোনো সমস্যা হচ্ছে না৷ তবে এই সংকটের সমাধান না হলে বিপদে পড়তে হবে শীতের ঠিক আগে আগে, যখন ইউক্রেনের মজুদ ফুরিয়ে যাবে৷

Günther Oettinger Pressekonferenz 02.06.2014
ইইউ-র জ্বালানি বিষয়ক কমিশনার গ্যুন্টার ও্যটিঙারছবি: picture-alliance/dpa

কিয়েভ বলছে, রাশিয়া প্রতি হাজার ঘনমিটার গ্যাসের দাম এখনকার ৪৮৫.৫০ ডলার থেকে ৩২৬ ডলারে নামিয়ে আনতে রাজি থাকলে তাঁরাও বকেয়া পাওনা মিটিয়ে দিতে প্রস্তুত ছিল৷ কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি ৩৮৫ ডলার থেকে এক পয়সাও কমাতে রাজি নন৷

এই পরিস্থিতিতে কিয়েভের আলোচনায় দুই পক্ষকেই ছাড় দেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন ও্যটিঙার৷ তাঁর প্রস্তাব ছিল, ইউক্রেন আপাতত এক বিলিয়ন ডলার রাশিয়াকে দেবে এবং বকেয়ার বাকি টাকা কিস্তিতে শোধ করবে৷ পাশাপাশি পুটিনের দাবি অনুযায়ী প্রতি হাজার ঘনমিটার গ্যাসের জন্য ৩৮৫ ডলারই ইউক্রেন দেবে, তবে সেটা আসছে শীতে৷ আপাতত গ্রীষ্মের বাকি দিনগুলোতে ইউক্রেনকে গ্যাস দিয়ে ৩০০ ডলার করে নেবে রাশিয়া৷

ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইউক্রেন সরকার ও্যটিঙার-এর প্রস্তাব মানতে রাজি থাকলেও রাশিয়া তাতে সাড়া দেয়নি৷

এক সময় ইউক্রেনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হিসাবে থাকা ক্রাইমিয়া গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ান ফেডারেশনে যোগ দেয়ার পর থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেন এবং তাদের পশ্চিমা মিত্রদের টানাপড়েন চলছে৷ মস্কো ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অস্ত্র জোগাচ্ছে বলে কিয়েভ অভিযোগ করে এলেও রাশিয়া তা অস্বীকার করে আসছে৷

জেকে/এসবি (এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য