1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গাড়ি কথা বলবে!

১৮ জুলাই ২০১১

যানবাহন নিয়ে মানুষের গবেষণা চলছেই৷ কীভাবে গাড়ির গতি আরও বাড়ানো যায়, কীভাবে অন্যান্য কাজেও গাড়ি ব্যবহার করা যায় এসব নিয়ে মানুষের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে৷

https://p.dw.com/p/11y9x
গাড়িও কথা বললে আর সমস্যা কী!ছবি: DW/Arnulf Boettcher
‘টকিং কার'

মানুষ হিসেবে আমরা একে অপরের সঙ্গে কথা বলি৷ অন্যান্য প্রাণীও সেটা করে থাকে৷ কিন্তু গাড়িতে-গাড়িতে কথা, এটা কী কেউ কখনো শুনেছেন!

ইটালির বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে গবেষণা করছেন৷ তারা বলছেন, গবেষণা সফল হলে এক গাড়ি আরেক গাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে৷ ফলে কোনো গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লে সঙ্গে সঙ্গে ঐ রাস্তায় থাকা অন্য গাড়ি খবর পেয়ে যাবে৷ এতে করে পেছনে থাকা গাড়িগুলো চাইলে রাস্তা পরিবর্তন করে অন্য দিকে চলে যেতে পারবে বা বিকল্প কোনো উপায় খুঁজে নিতে পারবে৷

ইটালির বোলোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এ বিষয়ে কাজ করছেন৷ ইতিমধ্যে তারা প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার তৈরি করে ফেলেছেন৷ এই সফটওয়্যারের মাধ্যমেই এক গাড়ি অন্যটির সঙ্গে যোগাযোগ করবে৷ আগামী মাসে সফটওয়্যারটি পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি গাড়িতে সংযোগ করা হবে৷ এরপর গাড়ি চালিয়ে দেখা হবে সেটা কেমন কাজ করে৷

Flash-Galerie Deutschland Messe CeBIT 2010 in Hannover Cockpit-Computer
গাড়ি ক্রমশ আরও আধুনিক হয়ে উঠছেছবি: picture alliance / dpa

এই প্রযুক্তিকে বলা হচ্ছে টেলিমেটিক্স৷ টেলিকমিউনিকেশনস ও ইনফরমেটিক্স'এর সমন্বয় ঘটানো হয়েছে এই প্রযুক্তিতে৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন, বর্তমানে রাডারের সাহায্যে একটি গাড়ি আগে থেকেই জানতে পারে যে, সামনে কোনো দুর্ঘটনা হয়েছে কী না৷ সেটা সম্ভব তখনই যখন গাড়িটি একেবারে প্রায় দুর্ঘটনাস্থলের কাছে থাকে৷ এর ফলে শুধু দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়৷ কিন্তু তাদের গবেষণা সফল হলে কয়েক কিলোমিটার দূর থেকেই সামনের দুর্ঘটনার কথা জানতে পারবে গাড়ি৷

এই পদ্ধতিতে প্রত্যেকটি গাড়ি ওয়াই-ফাই প্রযুক্তিতে যুক্ত থাকবে৷ ফলে কোনো গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লে তার ‘অ্যাক্সেলারেশন সেন্সর'এ পরিবর্তন আসবে - যেটা সঙ্গে সঙ্গে জেনে যাবে পেছনের গাড়িগুলো৷

গবেষক দলের সদস্য অধ্যাপক গুস্তাভো মার্ফিয়া বলেন, এ ধরণের একেকটি ডিভাইসের দাম পড়বে ২৫ পাউন্ড৷ ডিভাইসটি গাড়ির ড্যাশবোর্ডে লাগানো যাবে৷ এছাড়া ওয়াই-ফাই আছে এমন স্মার্টফোনেও এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে৷

এই গবেষণা সফল হলে ‘স্মার্ট সিটি' অর্থাৎ আধুনিক শহর তৈরির কাজ আরও এগিয়ে যাবে৷ যে শহরের সব কিছু চলবে কম্পিউটারের মাধ্যমে৷

কে কেমন গাড়ি চালায়?

এবার অন্য ধরনের গাড়ির কথা৷ যেটা তৈরি করছে ব্রিটিশ কোম্পানি ‘রিভারসিম্পল'৷ এই গাড়িগুলো হবে হাইড্রোজেন চালিত৷ কীভাবে গাড়ি চালানো হচ্ছে সেই তথ্যগুলো চলে যাবে সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন ওয়েবসাইটে৷ ফলে কে, কীভাবে গাড়ি চালায় সেটা অন্যরা জানতে পারবে৷ অর্থাৎ কে কম জ্বালানি খরচ করে গাড়ি চালায়, কে ভালভাবে ব্রেক কষতে পারে, কার গাড়ি চালানো আরামদায়ক - এসব জানা যাবে৷

এদিকে ইটালির গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘ফিয়াট' আরেক ধরণের গাড়ির কথা বলছে৷ এই গাড়ির চালকরা নিজে কীভাবে গাড়ি চালাচ্ছে সেই তথ্য জমা করতে পারবে পেনড্রাইভে৷ পরে কম্পিউটারে সেটা চালিয়ে জানতে পারবে কীভাবে আরও ভালভাবে গাড়ি চালানো যায়৷

গাড়ি, না কম্পিউটার?

যদি একটা পরিবারের সবাই গাড়ি চালায় সেক্ষেত্রে যে যখন ড্রাইভিং সিটে বসবে, তখন গাড়ি যদি তার পছন্দমতো আচরণ করে তাহলে মন্দ হয় না৷ যেমন কেউ ড্রাইভিং সিটে বসার সঙ্গে সঙ্গে যদি সেটা তার পছন্দমতো পেছনের দিকে হেলে যায় এবং চালকের পছন্দের গানগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে যায় তাহলে ভালই লাগার কথা৷ গাড়িতে থাকা কম্পিউটার সে ধরনের ব্যবস্থা করে দিতে পারবে৷

এসব কারণে অনেকে বলছেন, ভবিষ্যতে গাড়িগুলোই হয়ে উঠবে একেকটি কম্পিউটার৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক