1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সংসার-গবেষণা

২৩ নভেম্বর ২০১১

একটা দিনকে চব্বিশে নয়, ঈশানী রায়চৌধুরী হাজরা ভাগ করে নিতে পারেন ৪৮ ঘন্টায়৷ একসঙ্গে বিজ্ঞান গবেষণা থেকে শুরু করে সনেট লেখা পর্যন্ত সবকিছুই করেন এই নারী৷ সেইসঙ্গে সংসারের দায়িত্বপালনটাও৷ হাসিমুখেই৷

https://p.dw.com/p/13FE6
ঈশানী রায়চৌধুরী হাজরাছবি: Ishani Hazra

একদিকে সাহিত্য আর অন্যদিকে বিজ্ঞান, এ'দুটো একে অপরের সঙ্গে মেলে কী? এ প্রশ্ন তুললে অনেকেই ভুরু কুঁচকে তাকাতে পারেন৷ ঈশানী রায়চৌধুরী হাজরা কিন্তু এই দুই ভিন্ন মেরুকে মিলিয়ে দিয়েছেন একসঙ্গে৷ সাহিত্য আর বিজ্ঞানের একসাথে চর্চা তো সহজ বিষয় নয়! বিজ্ঞান জগতে কী করছেন ঈশানী ? জানালেন, ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সায়েন্স অ্যাকাডেমির একটি গবেষণামূলক প্রকল্পে কাজ করেন ঈশানী৷ ভারতে এবং অন্যত্র ১৯২০ সাল থেকে ইলেকট্রনিক গবেষণা এবং শিক্ষার ধারাটির কীভাবে বিবর্তন হয়েছে, যেগুলোর আজ পর্যন্ত কোন তথ্যপ্রমাণাদি নেই, সেগুলি সাজানোই তাঁর কাজ৷ ১৯৬৫ সাল থেকে এ বিষয়ে কিছু তথ্য রয়েছে৷ কিন্তু প্রথমদিকের ১৯২০ থেকে ৬৫ পর্যন্ত ৪৫ বছরের কোন হিসেব নেই৷ অনেককিছুই গেছে হারিয়ে৷ সেসব উদ্ধার করা এবং তার একটা তথ্যপ্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ করাটাই ঈশাণীর বিজ্ঞান গবেষণার কাজ৷ প্রাক স্বাধীনতা আর স্বাধীনতা উত্তর ভারত সহ দক্ষিণ এশিয়ায় কীভাবে এগিয়েছে এই গবেষণা, সেটা দেখাতে চান তিনি৷

Ishani Roychowdhury Hazra
পেশা, নেশা ও সংসার – সবাই সামলাচ্ছেন ঈশানী রায়চৌধুরী হাজরাছবি: Ishani Hazra

এই জটিল কাজ ছাড়াও ঈশাণী কিন্তু দিব্যি হাসিমুখে সামলাচ্ছেন দুই পুত্র এবং স্বামী সহ তাঁর সংসার৷ আর আছে তাঁর বিজ্ঞাপনের জগতের কাজ, রয়েছে লেখালিখি৷ এ পর্যন্ত বেশ কিছু বইও বেরিয়েছে তাঁর৷ মোট আঠারোটি৷ এতসব কিছুর জন্য তো অনেক সময় দিতে হয়৷ একসঙ্গে এতকিছু সামলান কীভাবে তিনি? ঈশাণীর জবাব: দিন শুরু করেন তিনি খুব সকালে৷ এরপর সংসার সামলে দিনের প্রতিটি ঘন্টাকে ব্যবহার করে চলেন কাজের নিরিখে৷ যা চলতে থাকে সেই মধ্যরাত পর্যন্ত৷ এবং ঈশাণীর বিশ্বাস, ২৪ ঘন্টার দিনকে ৪৮ ঘন্টায় ভাগ করে নেওয়া যায়৷ তার জন্য প্রয়োজন হয় তীব্র ইচ্ছাশক্তির৷ আর কাজ করার তাগিদের৷ যেটায় তিনি অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন৷

ঈশানী রায়চৌধুরী হাজরা একজন ব্যতিক্রমী নারী৷ নিজের জীবন আর কাজকর্ম প্রসঙ্গে এতকথা জানালেও, যা তিনি জানান নি, তাহল তাঁর দুটি চোখ নিয়ে যে গুরুতর অসুখে তিনি ভুগছেন, সে প্রসঙ্গ৷ দেশে তো বটেই, বিদেশ গিয়েও চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়েছেন তিনি৷ যাঁরা জানিয়েছেন, এই অসুখ সহজে সারার নয়৷ দৃষ্টিশক্তি ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসাই এই অসুখের নিয়তি৷ তাতেও কিন্তু মনোবল হারান নি ঈশানী৷ যতদিন চোখে দেখা যাচ্ছে, কাজ তো করে যেতেই হবে৷ লিখতেও হবে৷ পালন করতে হবে দায়দায়িত্বগুলো সব৷ সেগুলোকে অতএব অবহেলা করা নয়, আলোয় আলোয় আরও আলোকিত করাটাই এই নারীর লক্ষ্য৷ সে কাজটা করে চলেছেন তিনি নিষ্ঠাভরে৷

সম্প্রতি কবিতার এক দুরূহ ছন্দনির্মাণ, সনেট রচনার কাজে হাত দিয়েছেন ঈশাণী৷ প্রকাশিত হতে চলেছে তাঁর সনেটের এক সংকলন আগামী কোলকাতা বইমেলায়৷ বন্ধুদের জন্য শুনিয়ে দিলেন সেই টাটকা সনেট একখানা৷ যার শেষ পংক্তি হল, ‘হৃদয় গভীরে আলেয়ার আলো, নিশির ডাক / ভালোবাসা তুই দু'চোখের বিষ, দূরেই থাক৷'

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান