1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হৃদপিণ্ডের সংক্রমণ

ইয়ানোশ ডেলকার/আরবি১ ডিসেম্বর ২০১২

খেলাধুলা স্বাস্থ্যকর, কিন্তু তা মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে শরীরের ক্ষতিও হতে পারে৷ হৃদপিণ্ডের পেশির সংক্রমণ থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে৷ এই রোগটিকে কীভাবে প্রতিরোধ করা যায় এবং খেলাধুলা কখন ক্ষতিকারক, তা নিয়ে চর্চা চলছে৷

https://p.dw.com/p/16u1J
Rennende Beine - ein Motiv aus dem Vorspann zur ARD-Krimireihe "Tatort" (undatiertes Handout). Die Krimireihe begann am 29. November 1970 mit dem Film "Taxi nach Leipzig", am kommenden Sonntag (25.05.2008) läuft die 700. Folge mit dem neuen Leipziger Ermittlerteam Thomalla und Wuttke (zu dpa-Themenpaket "700. Tatort-Folge" vom 23.05.2008) ACHTUNG: Keine Archivierung - Verwendung nur mit Urheberhinweis Repro: WDR +++(c) dpa - Bildfunk+++ pixel
ছবি: picture-alliance/dpa

ডা. উরসুলা হিল্ডেব্রান্টের প্রতিপক্ষ অত্যন্ত ক্ষুদ্র, যা অনুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া দেখা যায় না৷ এত ছোট হওয়া সত্ত্বেও মানুষের মৃত্যু ডেকে আনতে পারে এগুলি৷ এরা হল রোগ জীবাণু, যারা রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হার্টে ঢুকে বাসা বাঁধতে পারে৷ যার ফলাফল মারাত্মক হতে পারে৷

ড. হিল্ডেব্রান্ট কোলনের স্পোর্টস বিশ্ববিদ্যালয়ে হার্টের পেশির সংক্রমণে আক্রান্ত রোগীদের চিকিত্সা করেন৷ হার্টের পেশি রক্ত পাম্প করে সঞ্চারিত করে সারা শরীরে৷ আর এই পেশিতে সংক্রমণ দেখা দিলে শরীরের গঠন প্রণালীতে বৈকল্য দেখা দেয়৷

খেলোয়াড়দের ঝুঁকি বেশি

ড. হিল্ডব্রান্ড জানান, ‘‘হার্টের পেশির সংক্রমণে আক্রান্ত হতে পারেন খেলোয়াড় বা আয়েশী মানুষ যে কেউ৷ তবে খেলোয়াড়দেরই এই ঝুঁকিটা বেশি৷ বিশেষ করে কোনো সংক্রণ বা অসুখবিসুখের পরপরই আবার ট্রেনিং শুরু করলে৷''

সাধারণত খেলাধুলা বা শারীরিক পরিশ্রম করার পর শরীর নাজুক থাকে৷ ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসরা এই সুযোগটা গ্রহণ করে শরীরের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়ায় ঢোকার চেষ্টা করে৷ খেলাধুলার সময় হার্টে রক্তচলাচল হয় দ্রুত৷ হার্টের চারটি প্রকোষ্ঠ থাকে, যেগুলি হার্টের ভাল্ভের সঙ্গে সংযুক্ত৷ এখানে রক্ত চলাচল করে দ্রুত প্রবাহিত নদীর মত৷ জগিং বা ফুটবল খেলার সময় হৃদপিণ্ডে রক্ত সঞ্চারের গতি বেড়ে যায়৷ এর ফলে রোগজীবাণু হার্টের ভাল্ভের পেছনে সেঁটে থাকতে পারে৷ ফলে দেখা দেয় সংক্রমণ৷

প্রতিরক্ষার সহজ উপায়

হার্টের পেশির সংক্রমণ রোধ করতে হলে বিশেষ জরুরি হল, যে কোনো রোগকে ভালোভাবে সারানো৷ বলেন ড. হিল্ডেব্রান্ড৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘সহজ কথায় বলা যায়, জ্বর ভালো হলেও কমপক্ষে দুদিন অপেক্ষা করতে হবে৷ এছাড়া হলদে সবুজ রঙের কফ থাকলে, তা ভালো হতে হবে৷ কেননা এতে বোঝা যায় বিপজ্জনক জীবাণু শরীরে এখনও রয়ে গেছে৷''

ড. উরসুলা হিল্ডেব্রান্ডের কাছে একটা সমস্যা হল, হার্টে সংক্রমণ হলে বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে৷ যেমন বুকে ব্যথা বা শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে, পাল্স বেড়ে যাওয়া কিংবা রাতে ঘেমে যাওয়া ইত্যাদি৷ তাই এই রোগটি হলে শনাক্ত করতে দেরি হয়ে যায়৷ আর অসুখটি ধরতে যতই দেরি হয়, ততই বেড়ে যায় মৃত্যুর ঝুঁকি৷ ২০০৯ সালে জার্মান লাইট অ্যাথলেট রেনে হ্যার্মসকে মৃত অবস্থায় তাঁর বাড়িতে পাওয়া গিয়েছিল৷ ময়নাতদন্তের পর জানা যায়, ২৬ বছর বয়স্ক এই খেলোয়াড় হার্টের পেশির সংক্রমণে ভুগছিলেন, যা শনাক্ত করা হয়নি৷ মৃত্যুর দিন তিনি ট্রেনিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন৷

BAYREUTH, GERMANY - AUGUST 16: Joerg Jaksche of Germany and Liberty Seguros Team enroute to the finish line during the second stage of the Deutschland Tour 2005 from Pegnitz near Bayreuth, Germany and Bodenmais, Germany on August 16, 2005. (Photo by Friedemann Vogel/Bongarts/Getty Images)
ছবি: Getty Images

ফাবিয়ানের ভাগ্য ভালো

অন্যদিকে আরেক তরুণ অ্যাথলেট ফাবিয়ান শ্পিনরাথ অল্পের জন্য রক্ষা পেয়ে যান৷ একবার দৌড় প্রতিযোগিতা থেকে এসে খুব ক্লান্ত বোধ করেন ফাবিয়ান৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘সাধারণত খেলার পর দশ মিনিট বিশ্রাম নিলেই চলে৷ কিন্তু আমি পাঁচ ঘণ্টা ঘুমিয়েছি৷ ডাক্তার ভেবেছিলেন, এটা বুঝি কোনো ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ৷ তাই অ্যান্টিবায়োটিকের প্রেসক্রিপশন দেন৷ কিন্তু দেড় মাস পরেও যখন উপসর্গগুলি দূর হল না, তখন আবার পরীক্ষা করে বোঝা গেল, হার্টে সংক্রমণ৷''

এই তরুণ দৌড়বিদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে৷ ছয় মাস কোনো শারীরিক পরিশ্রম থেকে বিরত থাকতে হয় তাকে৷ সিঁড়ি ভেঙে ওপরে ওঠার বদলে লিফটে চলার অভ্যাস করতে হয়, ট্রামে যাতায়াত করতে থাকেন একেবারে গন্তব্যস্থল পর্যন্ত৷ আগে কিছুটা পথ দৌড়ে পাড়ি দিতেন তিনি৷ ট্রেনিংয়ের চিন্তা একেবারেই মাথা থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে হয়৷ ছয় মাস পর ধীরে ধীরে আবার খেলাধুলা শুরু করতে থাকেন ফাবিয়ান৷ ইতিমধ্যে তার হৃদপিণ্ডের সংক্রমণ ভালো হয়ে গেছে৷ ড. হিল্ডেব্রান্ট বলেন, ‘‘আমরা হার্টের যাতে স্থায়ী ক্ষতি না হয়, সে দিকে লক্ষ্য রেখেছি৷ সম্পূর্ণ ভালো হওয়ার আগেই শারীরিক তত্পরতা শুরু করলে হার্টের কার্যক্ষমতা সারা জীবন ধরে সীমিত হয়ে যেত৷''

রোগটি বিভিন্ন রকমের হয়

হৃদপিণ্ডের পেশির সংক্রমণ বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে৷ রোগ অনুযায়ী থেরাপিও দিতে হয়৷ তবে সাধারণত যে নিয়মটা মেনে চলতে হয়, তা হল, মাস ছয়েক যে কোনো ধরনের শারীরিক তত্পরতা থেকে বিরত থাকা৷ এছাড়া কোনো অ্যালকোহল চলবে না৷ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে হবে৷ ঘুমাতে হবে প্রচুর৷

হার্টের পেশির সংক্রমণ শুধু শিল্পোন্নত দেশেরই সমস্যা নয়, উন্নয়নশীল দেশেও দেখা যায় এই রোগ৷ তবে সেসব দেশে সাধারণত ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক দ্বারা সংক্রমিত হয় এই অসুখ৷ ধনী দেশগুলিতে ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে হার্টের পেশির সংক্রমণ৷

এইসব জীবাণুকে প্রতিহত করতে হলে ছোটখাট ঠাণ্ডা লাগলেও তা উপেক্ষা করা ঠিক হবে না৷ এছাড়া নিজের শরীরের সতর্ক সংকেতকে ভালোভাবে শুনতে হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য