1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্ষুদ্র চাষিদের সহায়তা

হেলে ইয়েপেসেন/আরবি৯ জুলাই ২০১৩

সারা বিশ্বে এক বিলিয়নেরও বেশি চাষি রয়েছেন, যাঁরা আমাদের জন্য খাদ্যদ্রব্য উত্পাদন করে থাকেন৷ এঁদের মধ্যে আবার অধিকাংশই দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশের ক্ষুদ্রচাষি৷ যাঁরা কোনো রকমে নিজেদের খাওয়া-পরাটা জোগাড় করতে পারেন৷

https://p.dw.com/p/193zN
ছবি: DW

এই সব চাষিকে উন্নয়নশীল দেশের কৃষিক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী বলা যায়৷ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, এফএও বা ফাও হিসাব করে দেখেছে যে, উন্নয়নশীল দেশের একজন চাষি বছরে ১৫০ ডলার তাঁর কৃষিখেতে বিনিয়োগ করে থাকেন৷ অর্থাৎ সারা বিশ্বের ক্ষুদ্র চাষিরা সবমিলিয়ে বছরে ১৭০ বিলিয়নের ডলারের মতো বিনিয়োগ করেন তাঁদের কৃষি জমিতে৷ এই অর্থ সব রকমের জাতীয় উন্নয়ন কর্মসূচি ও গ্রামাঞ্চলের উন্নয়ন প্রকল্পের মোট বিনিয়োগের চেয়েও বেশি৷

বিনিয়োগকারী শুধু বড় প্রতিষ্ঠানগুলিই নয়

অনেকে বিনিয়োগকারী বলতে সরকার ও বড় বড় প্রতিষ্ঠানকে বোঝেন, বলেন জ্যাকব স্কোয়েট৷ বিশ্ব খাদ্য ও কৃষিসংস্থা, ফাও পরিচালিত ‘কৃষি অর্থনীতিতে বিনিয়োগ'-এর ওপর একটি সমীক্ষার পরিচালক তিনি৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘আমরা সংখ্যাগুলি বিশ্লেষণ করে বুঝতে পেরেছি যে, কৃষি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগকারী হলেন চাষিরা৷''

Landverpachtung an ausländische Investoren in Äthiopien
ক্ষুদ্র চাষিদের বিনিয়োগকারী হিসাবে সহায়তা দেওয়া উচিতছবি: DW

এই সব ক্ষুদ্র চাষি চাষাবাদের ক্ষেত্রে নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন৷ তাঁদের কৃষিখেতের পরিমাণ ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে৷ বিদেশের বড় বড় বিনিয়োগকারীরা বিশেষ করে আফ্রিকার কৃষি জমির দিকে লোভের দৃষ্টি দিচ্ছেন, করছেন ভূমিগ্রাস৷ ক্ষুদ্র চাষিদের তাঁদের জমি থেকে উত্খাত করছেন৷ মালিক হিসাবে নাম নিবন্ধিত না থাকায় সেরকমভাবে প্রতিবাদও করতে পারছেন না চাষিরা৷ সরকার ও আঞ্চলিক কর্মকর্তারা বড়বড় বিনিয়োগকারীদের কাছে কৃষিজমি বিক্রি করে বা লিজ দিয়ে দিচ্ছেন৷ যুক্তি হিসাবে পল্লী এলাকায় কর্মসংস্থান, পরিকাঠামো ও প্রযুক্তির উন্নয়ন হবে বলে জানাচ্ছেন৷ কিন্তু লাইপলিশ ইন্সটিটিউট ফর গ্লোবাল অ্যান্ড রিজিওনাল স্টাডিজ বা গিগা ইন্সটিটিউট এই যুক্তিকে মেনে নিতে পারছে না৷ জার্মানির অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সাহায্য মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় ভূমিগ্রাসের ফলাফল নিয়ে একটি জরিপে অংশ নিচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানটি৷ গিগা ইন্সটিটিউটের জান লে বলেন, ‘‘এই ব্যাপারে এখনও চূড়ান্তভাবে কিছু বলা যায় না৷ তবে আমরা লক্ষ্য করেছি, বড়বড় বিনিয়োগকারীরা জমি নিয়ে স্থানীয় ক্ষুদ্র চাষিদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন৷ এই প্রবণতা ক্ষুদ্র চাষিদের জন্য বিপদ ডেকে আনবে৷''

তেমন কোনো কর্মসংস্থান করা যায়নি

‘‘বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলি স্থানীয় পর্যায়ে চাকরি-বাকরি সৃষ্টি করার কথা বললেও এই আশা পূরণ হয়নি এখন পর্যন্ত৷ প্রযুক্তির প্রয়োগও সম্ভব হয়নি গ্রামাঞ্চলে৷ সেসব জায়গায় শুধু যে প্রযুক্তির ঘাটতিই রয়েছে তাই নয়, প্রযুক্তিকে কাজ লাগানোর মতো জ্ঞানেরও অভাব রয়েছে৷'' জোর দিয়ে বলেন জান লে ৷ তিনি আরো জানান, অনেক এলাকায় এখনও কয়েক'শ বছর আগের মতোই কৃষিকাজ চলে আসছে৷

Porträt - Jakob Skoet
জ্যাকব স্কোয়েটছবি: privat

বড় বিনিয়োগকারীরা স্থানীয় পরিকাঠামোর উন্নয়নের ব্যাপারে তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারেননি৷ তাঁরা গ্রামাঞ্চলে মাঝে মাঝে বিনিয়োগ করলেও রাস্তাঘাট নেই এমন ধরনের প্রত্যন্ত অঞ্চলে খুব কমই তত্পর হয়েছেন৷
 

বিশ্ব খাদ্য ও কৃষিসংস্থার গবেষণা

বিশ্বের সাত বিলিয়ন মানুষের খাদ্যের নিশ্চয়তা দানে কৃষিঅর্থনীতির ভূমিকা নিয়ে ফাও একটি গবেষণা চালিয়েছে৷ এ সম্পর্কে ফাও-এর অর্থনীতিবিদ জ্যাকব স্কোয়েট বলেন, ‘‘আমাদের পর্যাপ্ত খাদ্যসংস্থান করতে হবে৷ বিশ্বব্যাপী খাদ্যদ্রব্যের সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে৷ অনেক জায়গায় শুধু মাত্র ক্ষুদ্র চাষিদের সম্পৃক্ত করেই সম্ভব এটা৷''

পল্লী উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে, যদি ক্ষুদ্র চাষিদের তাতে সরাসরি সম্পৃক্ত করা যায়৷ বিভিন্ন দেশের সরকারদের চিন্তা-ভাবনা করতে হবে, যাতে চাষিরা বিনিয়োগের সুযোগ পান, সহজে খাদ্যের বাজারে প্রবেশ করতে পারেন এবং উত্পাদন বাড়াতে পারেন৷

জার্মানির অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন মন্ত্রণালয় সহযোগী দেশগুলির সঙ্গে ক্ষুদ্র চাষিদের অবস্থার উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে৷ এই লক্ষ্যে একটি ‘টাস্ক ফোর্স' গঠন করা হয়েছে৷ যেটি খাদ্যের নিরাপত্তা ও পল্লী উন্নয়নের লক্ষ্যে সব রকম কাজকর্মের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করবে ও এগিয়ে যাবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য