1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কেমন আছে জার্মান ছেলে-মেয়েরা?

নাওমি কনরাড/আরবি১৬ এপ্রিল ২০১৩

কেমন আছে জার্মানির শিশু কিশোররা? এই প্রশ্ন যদি করা হয়, উত্তরে বলা যায় ভালোই তো! শিক্ষা ও প্রযুক্তির দুয়ার তাদের কাছে খোলা৷ অনেকটাই স্বাবলম্বী তারা৷ ইচ্ছামতো অনেক কিছু করতে পারে৷ ইত্যাদি, ইত্যাদি৷

https://p.dw.com/p/18GDP
ছবি: picture-alliance/dpa

সম্প্রতি জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ‘ইউনিসেফ'-এর উদ্যোগে এক সমীক্ষা করা হয়েছিল৷ এতে ২৯ দেশের ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সি ছেলে-মেয়েকে প্রশ্ন করা হয়েছিল৷ জানতে চাওয়া হয়েছিল দারিদ্র্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়ে তাদের মনোভাব৷ এ ব্যাপারে তাদের উত্তরের মূল্যায়ন করে ছয় নম্বরে স্থান পেয়েছে জার্মানি৷ অংশ গ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল ১৭৬,০০০-এর ওপরে৷

জার্মানি থেকে অংশগ্রহণ করেছিল ৫,০০০-এর মতো ছেলে-মেয়ে৷ সব মিলিয়ে তারা কেমন আছে এই প্রশ্নটি রাখা হয়েছিল সব শেষে তাদের কাছে৷ কিন্তু বাস্তব চিত্রের প্রতিফলন ঘটেনি শেষ প্রশ্নের উত্তরে৷ আজকের তরুণ সম্প্রদায় তাদের মা-বাবার প্রজন্মের তুলনায় ধূমপান কম করে, শিক্ষা দীক্ষায় সুযোগ পায় বেশি, চাইলেই পেয়ে যায় অনেক কিছু৷ কিন্তু জার্মান উত্তরদাতাদের প্রতি সাত জনে একজন তাদের জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট নয় বলে জানিয়েছে৷ তাদের এই হতাশাপূর্ণ উত্তর বিস্মিত করেছে বিশেষজ্ঞদের৷ আর এদিক দিয়ে ২২ নম্বরে স্থান পেয়েছে জার্মানির শিশু কিশোররা৷ ২০০৭ সালে নেওয়া একই ধরনের এক সমীক্ষায় জার্মানির স্থান ছিল ১২ নম্বরে৷

মানসিক চাপ

ইউনিসেফের জার্মান শাখার মুখপাত্র প্রফেসর হান্স বেরট্রাম এর কারণ সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিয়ে জানান, আজ প্রতিযোগিতার বাজারে মানুষের দক্ষতা, যোগ্যতা ও সাফল্যের ওপর বেশি জোর দেওয়া হয়৷ তাই ছেলে-মেয়েদের ওপর এক্ষেত্রে একটা মানসিক চাপ থাকে৷ সুখের অনুভূতিটাও তেমনভাবে জাগতে পারে না৷

Bulgarischer Teenager in Sofia
কেমন আছে জার্মানির ছেলে-মেয়েরা?ছবি: AFP/Getty Images

জার্মান শিক্ষক সমিতির মুখপাত্র ইওজেফ ক্রাউস অবশ্য বিষয়টিকে কিছুটা ভিন্নভাবে দেখছেন৷ তাঁর মতে, আজকাল পরিবারে ছেলে-মেয়েদের অতিরিক্ত প্রশ্রয় দেওয়া হয়৷ আগলে রাখার একটা প্রবণতাও লক্ষ্য করা যায়৷ বিশেষ করে যে সব পরিবারে এক সন্তান রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রেই এই ব্যাপারটা লক্ষ্য করা যায়৷ আর এক সন্তানের পরিবার ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে৷ অবশ্য মাত্র ২০ শতাংশ পরিবারে ছেলে-মেয়েদের ব্যাপারে অতিরিক্ত সতর্ক থাকার একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়৷ আর এই সব কারণেই বাচ্চারা একটা মানসিক চাপ অনুভব করে৷ যা তাদের সুখানুভূতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়৷

সামাজিক পরিস্থিতিও দায়ী

শিক্ষকতায় দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে ইওজেফ ক্লাউসের৷ তাঁর মতে, সামাজিক ও পারিপারিশ্বিক পরিস্থিতিও এ জন্য কিছুটা দায়ী৷ এখানে এমন একটা পরিবেশ তৈরি করা হয়, যাতে আজকের ছেলে-মেয়েরা খুব ভালো থাকলেও নিজেরা ভালো আছে বলে মনে করে না৷ আর একটু স্পষ্ট করে বলা যায়, বাস্তব অবস্থা ও সেই অবস্থার প্রতি মনোভাব এই দুইয়ের মধ্যে একটা পার্থক্য রয়েছে৷ এমনিতেই জার্মানদের সম্পর্কে বলা হয় যে, অন্যান্য দেশের মানুষদের তুলনায় তারা ঘ্যানঘ্যান করতে পছন্দ করে৷ এটা নেই, সেটা নেই৷ এটা ভালো নয়, সেটা ভালো নয় এই রকম আরকি!

তবে জার্মানির সব ছেলেমেয়ে যে স্বচ্ছল পরিবারের সন্তান, একথা বলা যায় না৷ দরিদ্র শিশুর সংখ্যাও এখানে কম নয়৷ বেকার ও সামাজিক ভাতার ওপর নির্ভরশীল পরিবারে বাচ্চাদের সাধ আহ্লাদকে মেটানো প্রায়ই সম্ভব হয় না৷

আবার ফিরে যাওয়া যাক সেই সমীক্ষায়৷ স্ব-মূল্যায়নের ক্ষেত্রে নেদারল্যান্ডস ও স্ক্যান্ডিনেভিয়ার ছেলে-মেয়েরা এগিয়ে আছে৷ অর্থাৎ তারা নিজেরা ভালো আছে বলে মনে করে৷ আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ রুমেনিয়ার কিশোর কিশোরীরা ভালো নেই বলে জানিয়েছে৷ এদিক দিয়ে তাদের স্থান সব শেষে৷ এই সমীক্ষার ফলাফলে এটাই স্পষ্ট হয় যে, শুধু মাত্র পার্থিব স্বাচ্ছন্দ্যই সুখের অনুভূতি জাগাতে পারে না৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য