1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কসোভো আলবেনীয়দের ধর্মীয় অনুষ্ঠান

ফাহমিদা সুলতানা১০ অক্টোবর ২০০৮

কসোভো, মাত্র কয়েকদিন আগের এক রোববার৷ সেদিন ছিল ২৮-শে সেপ্টেম্বর৷ কসোভোর ক্লিনা শহর৷ রেড ব্রিক বা লাল ইটের অর্ধসমাপ্ত একটি গীর্জা গমগম করছিল মানুষের পদভারে৷

https://p.dw.com/p/FXvl
কসভোছবি: AP

কয়েকশ কসোভো আলবেনীয় সমবেত হয়েছিলেন এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে৷

বলা হয়ে থাকে, কয়েক শতাব্দী আগে অটোমান তুর্কস-এর সময়ে বহু মানুষ বাধ্য হয়ে ইসলাম ধর্মে দীক্ষা নিয়েছিলেন৷ কেন ? সেই কথায় পরে আসছি৷ এখন সেই সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলমানদের মধ্যে থেকেই অনেকেই ফিরে যাচ্ছেন খ্রিষ্টীয় ধর্মে৷ নতুন এই বল্কান রাষ্ট্রটির, ক্যাথলিক উপাসকদের এই অংশটির ,অনেকটাই পুনরুজ্জীবন পেয়েছে বলা যায়৷তাদেরই একজন ইসমত সোপি৷ পাঁচ মাস আগে আনুষ্ঠানিক ভাবে সোপি রোমান ক্যাথলিক হয়েছেন৷ তিনি বললেন, আমরা দ্বৈত জীবন যাপন করছি৷ বাড়ীতে আমরা ক্যাথলিক, তবে বাইরে আমরা ছিলাম ভালো মুসলিম৷ আমরা এটাকে ধর্মান্তরিত হওয়া বলবো না৷এটি পারিবারিক বিশ্বাসেরই চলমান প্রক্রিয়া৷

এই সেপ্টেম্বরের পবিত্র রমজান মাসটিতে প্রথমবারের মত সোপির ৩২ সদস্য বিশিষ্ট পরিবারের কেউ রোজা রাখলেন না৷

এবার চলুন ফিরে যায় আগের কথায়৷ বলছিলাম না, কয়েক শতাব্দি আগে অটোমান তুর্কস-এর আমলে বহু মানুষ বাধ্য হয়ে ইসলাম ধর্মে দীক্ষা নিয়েছিলেন৷ কেনো জানেন ? প্রচলিত আছে, জাতিগত আলবেনীয়দের সংখ্যা গরিষ্ঠ অংশই ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন, কারণ সেই সময়, ক্যাথলিকদের ওপর অতিরিক্ত করারোপ করা হতো৷ এটা হচেছে বল্কানরা যখন অটোমান সাম্রাজ্যের শাসনামলে ছিল, সেই সময়কার কথা৷ শতাব্দির পর শতাব্দি ধরে অনেকের মনেই ছিল তাদের খ্রিষ্টীয় শিকড়ের স্মৃতিচিহ্ন৷ সেই সময়টাতে তারা যেভাবে বাস করতেন, সাটাকে বলা হয়, ক্যাথলিকস্ ইন হাইডিং৷ অটোমানরা বল্কান ছেড়ে যাবার প্রায় এক সতাব্দি পর, এখন অনেকেই তাদের বিশ্বাসে ফিরে যাবার সুযোগ পেয়েছেন৷

প্রিস্টিনা পাবলিক ইউনিভর্সিটির হিস্ট্রি অব রিলিজিয়নের অধ্যাপক মুহায়েত মালা জানালেন, কসোভোর শতকরা ৫০ অথবা ৬০ ভাগ মানুষই রোমান ক্যাথলিক ধর্মের সঙ্গে আবেকপ্রবণ ভাবে জড়িত৷ তিনি বলেন, আমাদের পূর্ব পুরুষের বিশ্বাসই, এই অনুভূতির কারণ৷

খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের সোপি গোষ্ঠীর পূর্বপুরুষরা কয়েক শতাব্দি আগে অটোমান সাম্রাজ্য চলাকালে, ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু শতাব্দির পর শতাব্দি ধরে তারা বুকে লালন করতেন, খ্রীষ্টান রীতি নীতি৷ রোজার পাশাপাশি ইস্টারের সময় তারা ডিম রং করতেন, উদযাপন করতেন ক্রীসমাস৷

কসোভোর আলবেনীয় জনগোষ্ঠীর প্রায় শতকরা ৯০ ভাগই মুসলমান৷ আর রোমানক্যাথলিক রয়েছেন, মাত্র শতকরা ৪ ভাগ৷

কসোভোতে কয়েক খিষ্টান বুলগেরীয় এবং সার্বদের শাসনের পরে, ১৪৫৫ সালে এই অঞ্চলটি অটোমান সাম্রাজ্যের একটি অংশে পরিণত হয়৷

কসোভোর বেশীরভাগ পরিবারগুলোর মধ্যেই অত্যন্ত শক্ত একটি সামাজিক নেটওয়ার্ক রয়েছে৷ পরিবারের পুরুষরা প্রকাশ্যে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেও, বাড়ীর ভেতরে তারা খ্রিষ্টীয় রীতিনীতির চর্চা চালিয়ে গেছে৷ সেই চর্চায় নারী ও শিশুদেরও বিশ্বাস ছিল৷ অর্থাত্‌পুরো বিষয়টি সঞ্চালিত হয়েছে ছেলেমেয়েদের মধ্যেও৷