কম্পিউটার গেমস নিজে কোন সমস্যা নয়
১১ সেপ্টেম্বর ২০০৮তবে আসলেই কি কম্পিউটার গেমস ছেলেমেয়েদের প্রযুক্তির মনিটরে বন্দি করে ফেলছে কিংবা গেমসের নানা চরিত্রের মতোই সহিংস হয়ে উঠছে তারা? এই খেলা কি নেশাগ্রস্ত করে ফেলছে না কম বয়সী ছেলেমেয়েদের? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই হয়েছে গবেষণা৷
জার্মানির ইউনিভার্সিটি অব লাইপসিশ পরিচালিত দীর্ঘমেয়াদী এক গবেষণার সম্প্রতি প্রকাশিত রিপোর্টের ফল হলো, কম্পিউটার গেমস নিজে কোন সমস্যা নয়, গেম প্লেয়াররা কে কিভাবে একে নিচ্ছে তাই হলো মূল বিষয়৷
৫০ বছর আগে বিশ্ববাসীকে কম্পিউটার গেমসের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন মার্কিন পদার্থবিদ উইলিয়াম হিগিনবোথাম৷ তার গেমসের নাম ছিল টেনিস ফর টু৷ মূলত প্রযুক্তিগত কিছু বিষয়কে সহজ করতেই উদ্ভাবন করা হয়েছিলো এটি৷ কিন্তু সেই টেনিস ফর টূ-র হাত ধরেই কম্পিউটার গেমস আজ এই রূপ পেয়েছে৷
শুধু উন্নত বিশ্ব নয় বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশের শিশুরাও কমবেশি পরিচিত কম্পিউটার গেমসের সঙ্গে৷ নিছক খেলাই বিশ্বের যেন যুব সংস্কৃতির বড় অংশ৷ বাস্তবতার পাশাপাশি তৈরি হয়েছে আরেকটি জগত্- ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড৷
জাপানের সফটওয়্যার কোম্পানি সেগার প্রোগ্রামার ফেবিয়ান ডোয়েহলারই স্বীকার করেছেন সহিংস কিছু কম্পিউটার গেমসের কথা৷ এছাড়া এই গেমস আসক্তির কারণে তরুণদের সমাজ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার কথাও বাদ দেননি তিনি৷ তবে তাঁর যুক্তি, এই সংখ্যা খুব বেশি নয়৷
বর্তমানে অধিকাংশ কম্পিউটার গেমসই পার্টি গেমস৷ বন্ধুদের নিয়ে একসঙ্গে বসেই খেলা যায় এগুলো৷ লাইপসিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে, কম্পিউটার গেমারদের ৮০ ভাগের কাছেই প্রিয় এসব সোশ্যাল গেমস৷ এছাড়া আরেকটি ধরন হলো মাল্টিপ্লেয়ার অনলাইন গেমস৷ নেটে বসে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে খেলায় একসাথে অংশ নিতে পারে হাজারো প্লেয়ার৷ তবে এজন্য জমা দিতে হয় ফি৷ ওয়ার্ল্ড অব ওয়ারক্রাফট নামে এরকম একটি খেলারই বিশ্বজুড়ে ভক্ত রয়েছে ১ কোটি৷
সমালোচকদের অভিযোগ, এমন খেলায় সময়ের সাথে সাথে অপচয় হয় অর্থও৷ আর সেই সুযোগে ব্যবসা করে নিচ্ছে সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলো৷
গবেষণায় দেখা গেছে, গেমারদের ১০ ভাগ এই খেলায় পুরোপুরি আসক্ত৷ তাদের কেউ কেউ প্রতিদিন ১২ থেকে ১৩ ঘন্টা পর্যন্ত ব্যয় করছে কম্পিউটারে সামনেই৷ তবে এজন্য সন্তানের প্রতি বাবা-মার উদাসীনতাকেও কিছুটা দায়ি করছেন বিশেষজ্ঞরা৷
কম্পিউটার গেমসের ভাল দিকও পাওয়া গেছে গবেষণায়৷ কারণ এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী সমাজ তৈরি হচ্ছে৷ বন্ধুও হচ্ছে অনেক৷ ইউজারদের ৭৮ ভাগই নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে গ্রুপের সদস্যদের সঙ্গে৷ শুধু তাই নয়, ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে বাস্তবতাকে এক না করে দুটোই সুন্দর সামলে নিচ্ছে অনেকে৷ ভালো করছে পড়াশোনাতেও৷