1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ওবামার বক্তৃতাতেও সেন্সরের কাঁচি চালালো চীন

হোসাইন আব্দুল হাই২১ জানুয়ারি ২০০৯

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অভিষেক বক্তৃতা সম্প্রচারকালে কম্যুনিজম সম্পর্কে তার ভাষ্যটুকু কেটে বাদ দিয়েছে চীনা কর্তৃপক্ষ৷ তবে এর ফল হয়েছে উল্টো কারণ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা আরো বেশি করে ঐ অংশটিতেই আকৃষ্ট হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/GdsD
ওবামার পুরো বক্তৃতাটি মানুষকে জানতে দেয়নি চীনা কর্তৃপক্ষছবি: AP

ওবামা তাঁর বক্তৃতায় বলেন, পূর্বসুরীরা ট্যাঙ্ক এবং মিসাইল দিয়ে ফ্যাসিবাদ এবং কম্যুনিজমের পতন ঘটায়নি বরং মজবুত বন্ধন এবং দৃঢ় প্রত্যয়ের মাধ্যমে তা ঘটিয়েছে৷ সরকার নিয়ন্ত্রিত চীনা সেন্ট্রাল টেলিভিশন ওবামার বক্তৃতা সরাসরি সম্প্রচার করছিল, কিন্তু অনুবাদক যখন কম্যুনিজম এর কথা উল্লেখ করেন, ঠিক তখনই হঠাৎ স্টুডিওতে বসে থাকা একজন হাসিখুশি সংবাদ উপস্থাপকের দিকে টিভি ক্যামেরাটি ঘুরিয়ে দেয়া হয় যিনি এ ব্যাপারে অপ্রস্তুত থাকায় পুরোপুরি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যান৷ ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর দমনমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে সতর্ক করে দেয়া ওবামার অপর বক্তব্যও চীনা আক্রোশ থেকে রেহায় পায়নি৷ এটিও চীনা কর্তৃপক্ষের কাছে একটি স্পর্শকাতর বিষয় কেননা সেখানে অনেক ভিন্নমতাবলম্বীকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে অথবা পুলিশী নজরদারীতে রাখা হয়েছে৷

বক্তৃতায় ওবামা বলেন, দুর্নীতি, প্রতারণা এবং ভিন্নমতাবলম্বীদের কন্ঠ রোধ করে যারা ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে আছেন, তাদেরকে বলে দিতে চাই, জেনে রাখুন আপনারা ইতিহাসের ভুল পথে রয়েছেন, তবে আপনারা আপনাদের মুষ্টি আলগা করলে আমরা আমাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে প্রস্তুত আছি৷

Finanzminister Henry Paulson trifft den chinesischen Vize-Premier Wang Qishan in Peking
গত বছর অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র-চীন বৈঠক (ফাইল ছবি)ছবি: AP

কম্যুনিস্ট পার্টির মুখপাত্র দি পিপলস ডেইলি এর ওয়েবসাইটে ওবামার বক্তৃতার একটি অনুবাদ প্রকাশ করা হয়েছে যেখানে কম্যুনিস্ট শব্দটি বাদ দেয়া হয়েছে৷ এছাড়া ভিন্নমতাবলম্বীদের দমন সংক্রান্ত উদ্ধৃতিটি সম্পূর্ণই বাদ দিয়েছে এ পত্রিকাটি৷ চীনের দুই বৃহত্তম ইন্টারনেট পোর্টাল সিনা এবং সহু একই কাজ করে৷ চীনের অধিকাংশ ওয়েবসাইট ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিচালিত এবং সাধারণত প্রচলিত গণমাধ্যমের চেয়ে বেশি স্বাধীনতা ভোগ করে থাকে৷ কিন্তু সেগুলোও সরকারের খড়গের শিকার হচ্ছে এবং ওয়েবসাইটগুলোতে তিব্বত, তাইওয়ান এবং কম্যুনিস্ট নেতৃত্বের সমালোচনামূলক খবর এর মতো স্পর্শকাতর বিষয়সমূহ প্রকাশেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে৷

অন্যতম বৃহৎ ইন্টারনেট পোর্টাল নেটইজ এর একজন ব্যবহারকারী কম্যুনিজম সংক্রান্ত ওবামার বক্তৃতার অংশটুকু ইংরেজি ও চীনা ভাষায় পোস্টিং দেয় এবং সেখানে ব্লগারদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তীব্রভাবে৷ নাম উল্লেখ না করে পূর্ব কুইংডাও নগরীর একজন নেটইজ ব্যবহারকারী লিখেছেন, জনগণকে বোকা বানাতে দেশীয় গণমাধ্যম কেন একটি আংশিক ছেঁটে ফেলা ভাষ্য সরবরাহ করলো? কেন আমরা এখন পৃথিবীর প্রকৃত চেহারা দেখতে পারবো না?

অবশ্য সরকার নিয়ন্ত্রিত ইংরেজি পত্রিকা চীনা ডেইলি, যা মূলত বিদেশী পাঠকদের উদ্দেশ্য করেই প্রকাশ করা হয়, ওবামার বক্তৃতা সংক্রান্ত প্রথম পৃষ্ঠার সংবাদটি ভিন্নমতাবলম্বীদের দমন সংক্রান্ত উদ্ধৃতি দিয়ে শেষ করা হয়েছে৷ তবে এটি নিজ ওয়েবসাইটে তাঁর পুরো বক্তৃতার ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ করেছে৷

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা ইন্টারনেট প্রোজেক্ট এর পরিচালক ঝিয়াউ কিয়াং বলেন, সরাসরি সম্প্রচার থামিয়ে দেয়া এবং সাজানো অনুবাদ প্রকাশ দ্বারা বোঝা যায় চীনের সম্প্রচার কর্মকর্তারা খুব মনোযোগের সাথে ওবামার বক্তৃতা পর্যবেক্ষণ করছিলেন৷