1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্রাজিল, নাকি ফিলিস্তিন?

১৭ জুলাই ২০১৪

মেসুত ও্যজিলের একটি খবর নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তুমুল বিতর্ক চলছে৷ এক পক্ষ গাজার আহত শিশুদের অনুদান না দেয়ায় জার্মানির এ তারকা খেলোয়াড়ের সমালোচনায় মুখর, অন্যপক্ষ বলছেন ও্যজিলের উদ্যোগ প্রশংসনীয়৷

https://p.dw.com/p/1Cebs
Fußball WM 2014 Finale Argentinien Deutschland
ছবি: AFP/Getty Images

বিতর্কের সূত্রপাত ও্যজিলের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত একটি পোস্ট থেকে৷ সেখানে ও্যজিলের হয়ে জানানো হয়, বিশ্বকাপ থেকে তাঁর সমস্ত আয় তিনি দিয়ে দেবেন শিশুদের৷ সেখানে লেখা হয়েছে, আগে তিনি ব্রাজিলের ১১জন শিশুর অস্ত্রোপচারের অর্থ জুগিয়েছেন, তবে সংখ্যাটাকে বাড়িয়ে তিনি ২৩ করতে চান৷ কিন্তু খবর ছড়িয়ে যায় মুসলমান খেলোয়াড় ও্যজিল গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আহত ফিলিস্তিনি শিশুদের চিকিৎসায় ব্যয় করবেন বিশ্বকাপ থেকে করা তাঁর সমস্ত আয়৷ বাংলাদেশের একটি অনলাইন সংবাদপত্র, বেশ কয়েকজন অখ্যাত ব্লগার এবং ইয়াহুস্পোর্টসের খবরে এ ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ানো হলেও পরে অবশ্য প্রকৃত সত্য জানা গেছে৷ সত্যটা এমন, ও্যজিল ব্রাজিলের শিশুদের অনুদান দিয়েছিলেন গাজায় যুদ্ধ শুরুর আগে৷ তাঁর পরিকল্পনায় গাজার শিশুরাও আছে্ বলে এখনো জানা যায়নি৷

তবে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিতর্ক তারপরও থামেনি৷ সামহয়্যার ইন ব্লগে নিপুন কথন তাঁর পোস্টের শিরোনাম দিয়েছেন, ‘ওজিলকে নিয়ে বিভ্রান্তির একশেষ'

পুরো বিষয়টি তুলে ধরতে গিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমরা আরও একবার প্রমাণ দিলাম, যে আমরা হুজুগে বাঙালি৷ ফেসবুকের ভুয়া কিছু পেইজ, দেশের প্রথম সারির একটি অনলাইন পত্রিকার খবর এমনকি বাইরের কিছু মিডিয়াতেও ওজিলকে নিয়ে বিভ্রান্তি ছাড়ানো হলো৷ অবাক হলাম, ইয়াহু স্পোর্টসও নিশ্চিত না হয়ে এমনটাই লিখেছে! যদিও তাঁরা রিপোর্টের শেষে লিখে দিয়েছেন যে তাঁরা এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত নন এই ব্যাপারে, তবে ওজিলের ফেসবুক পেইজে ব্রাজিলের শিশুদের অপারেশনে সহায়তার ইঙ্গিত রয়েছে৷''

অনেকে যে খবরে সত্যতা যাচাই না করে ভুল খবরেই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে শুরু করেছেন এ নিয়ে নিপুন খানিকটা বিস্মিত এবং বিরক্ত৷ এ অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে তাঁর লেখার এ অংশে,‘‘ কোথায় তিনি বিশ্বকাপে আয় করা ২৪০ হাজার ইউরো ব্রাজিলের ভুগতে থাকা শিশুদের অপারেশনের জন্য দেয়ার কথা বললেন, আর সেটাকে আমরা প্যালেস্টাইনের যুদ্ধাহত শিশুদের জন্য ওজিলের দান বলে খবর রটিয়ে দিলাম! একবার ভালো করে যাচাই বাছাই করারও প্রয়োজন অনুভব করলাম না! নায়ক বানিয়ে দিলাম ওজিলকে! ওজিলের মুখপাত্র ক্রীড়া সাংবাদিক রব হ্যারিসও টুইট করে বিষয়টির অসত্যতা নিশ্চিত করেছেন৷ এরপর আর কি কোনো সন্দেহের অবকাশ আছে?''

তাঁর প্রশ্ন, ‘‘ বিশ্বকাপ জয়ের পর ব্রাজিলের আতিথেয়তায় মুগ্ধ ওজিল ফেসবুক পেজে ঘোষণা দিলেন আরও ২৩ জনের দায়িত্ব নেয়ার বিপদে দুঃস্থ মানুষের পাশে যিনি দাঁড়ান, তিনিই তো নায়ক৷ কিন্তু, না জেনে ভুলভাবে ভুল খবরে আমরা কাউকে কেন নায়ক বানাব?''

শেষে সবার উদ্দেশ্যে নিপুনের অনুরোধ, ‘‘দেখে, শুনে, বুঝে, ইন্টারনেটের বিভিন্ন বিশ্বস্ত সূত্র যাচাই করে তারপর পোস্ট দিন৷ মানুষ যেন ভুল বার্তা না পায় আপনার কাছ থেকে৷''

সামহয়্যারইনের আরেক ব্লগার সিদ্দিকী শিপলু ও্যজিল ব্রাজিলের শিশু, নাকি গাজার শিশুদের চিকিৎসার জন্য টাকা দিলেন এ প্রশ্ন তোলাটাকেই অমানবিক এবং অযৌক্তিক মনে করেন৷ ‘‘ওজিলের অনুদান গাজায় না-কি ব্রাজিলে?''-এর এই পোস্ট তিনি নিজের বক্তব্য প্রকাশ করেছেন আঞ্চলিক ভাষায়৷

FIFA Fußball WM 2014 Deutschland USA
যজিল ব্রাজিলের শিশুদের অনুদান দিয়েছিলেন গাজায় যুদ্ধ শুরুর আগেছবি: Getty Images

তাঁর মতে, ‘‘ওজিল অনেকের চাইতে অনেক উপরের স্তরের যে সে বিশ্বকাপ থেকে ইনকামের অংশ দুঃস্থ শিশুদের দান করছে৷ সেই কাজের লাইগাই তারে নিয়ে গর্ব করেন৷ ''

কেউ কেউ মুসলমান হয়েও গাজার শিশুদের না দিয়ে অনুদান ব্রাজিলের শিশুদের দেয়ায় তাঁর সোয়াব বা পুণ্য হবেনা বলায়, শিপলু তাঁদের বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন৷ সব কিছুর ওপরে যে মানবতা এবং কোনো মানুষ তাঁর অবস্থান থেকে যে কোনো জীবের কল্যাণ করলেই যে সোয়াব হতে পারে এমন মত প্রকাশ করতে গিয়ে শিপলু লিখেছেন, ‘‘ব্রাজিলের দুঃস্থ শিশুদের দান করলে ছওয়াব পাবে না তা আপনারে কে কইলো? নেট ঘেটে যতটুকু দেখলাম তাতে বুঝলাম সে অফিশিয়ালি ব্রাজিলের দুঃস্থদের জন্য টাকা দিয়েছে৷ কিন্তু দিয়েছে তো.. .. .কয়জন দেয়?''

তাঁর মতে, ‘‘গাজার অধিবাসীদের জন্য অনুদান দিয়েছে আলজেরিয়ার বিশ্বকাপ টিমের খেলোয়াড়রা৷ কিন্তু আমার মতে আর্থিক সাহায্যের চাইতে কূটনৈতিক সাহায্যই তাদের দরকার৷ আর্থিক সাহায্য শুধু সাময়িক সমস্যার সমাধান দেবে৷ কিন্তু পার্মানেন্ট সমাধানের জন্য দরকার রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কূটনৈতিক সাহায্য৷''

সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য