1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এ৩৩০ বিধ্বস্তের কারণ

৮ জুলাই ২০১২

২০০৯ সালের পহেলা জুন অ্যাটলান্টিকে বিধ্বস্ত হয় একটি বিমান৷ ব্রাজিলের রিও ডি জানেরো থেকে প্যারিসের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল বিমানটি৷ কিন্তু শেষ অবধি প্যারিসে আর পৌঁছায়নি সেটি৷ তিন বছর পর বিমানটি দুর্ঘটনার কারণ জানা গেল৷

https://p.dw.com/p/15TX4
BEIJING, CHINA - JANUARY 29: China Airlines Airbus 330 taxis on the runway on January 29, 2005 at Beijing's Capital Airport in China. The landmark direct flights between China and Taiwan started on Saturday and will operate until February 20 during the Chinese New Year. Up to 12 carriers from the two sides will operate 48 charter flights between the Chinese cities of Beijing, Shanghai and Guangzhou and the Taiwan cities of Taipei and Kaohsiung. (Photo by Adrian Bradshaw-pool/Getty Images)
ছবি: Getty Images

এয়ার ফ্রান্সের রিও-প্যারিস উড়ালটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর শোরগোল উঠেছিল চারদিকে৷ বিমান চলাচল আরো নিরাপদ করতে নতুন বিভিন্ন উদ্যোগ ঘোষণা করে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এয়ারবাস৷ কেননা বিধ্বস্ত বিমানটি ছিল সেই প্রতিষ্ঠানের৷ অন্যদিকে, এয়ার ফ্রান্স কর্তৃপক্ষও নড়েচড়ে বসে৷ অ্যাটলান্টিক মহাসাগরে বিধ্বস্ত বিমানের ২২৮ জন আরোহীর সবাই প্রাণ হারায়৷ কিন্তু সবারই প্রশ্ন ছিল, কীভাবে হয়েছে এই দুর্ঘটনা?

এয়ার ফ্রান্সের রিও-প্যারিস উড়ালের দুর্ঘটনার কারণ অবশেষে জানা গেছে৷ বৈমানিকের ভুল এবং যান্ত্রিক ত্রুটি – দুটোই দুর্ঘটনার কারণ, জানিয়েছে ফ্রান্সের দুর্ঘটনা তদন্ত কমিটি৷ এই চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুতের ক্ষেত্রে বিমানটির ‘ব্ল্যাক বক্স' বিশেষ ভূমিকা রেখেছে৷ চার কোটি মার্কিন ডলার খরচ করে সেটি উদ্ধার করা হয়েছিল দুর্ঘটনার দুই বছর পর৷ বিইএ জানিয়েছে, বিমানের স্পিড সেন্সর যেটি ‘পাইটোট্স' নামে পরিচিত, সেটি ঠিকভাবে কাজ না করায় সমস্যা শুরু হয়৷ ফরাসি প্রতিষ্ঠান টালেস এই স্পিড সেন্সর'এর নির্মাতা৷ ২০০৯ সালের দুর্ঘটনার পর এয়ারবাসের বিমানগুলো থেকে এই প্রতিষ্ঠানের স্পিড সেন্সর সরিয়ে নেওয়া হয়েছে৷

ফরাসি তদন্ত কমিটির প্রধান আল্যাঁ বুইয়ার দুর্ঘটনার বিষয়ে বলেন, বৈমানিকরা এক পর্যায়ে বিমানের নিয়ন্ত্রণ প্রায় হারিয়ে ফেলেন৷ বিইএ প্রতিবেদনে, এধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে করণীয় বিষয়ে বৈমানিকদেরকে প্রশিক্ষণ প্রদানের দিকে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে৷

epa02712959 Handout image made available on 01 May 2011 by the Bureau of Investigation and Analysis (BEA), responsible for the technical investigation of the disaster that killed 228 people, showing the discovery of the FDR recording (Black Box) of the Air France Airbus 330, flight AF 447 Rio-Paris, that crashed in mid ocean on 01 June 2009. BEA announced on 01 May 2011 that the box has been recovered. EPA/BEA/MT PESCHEL/HANDOUT HANDOUT EDITORIAL USE ONLY/NO SALES +++(c) dpa - Bildfunk+++
বিধ্বস্ত বিমানটির উদ্ধারকৃত ব্ল্যাকবক্সছবি: picture alliance / dpa

দুর্ঘটনার পূর্বে বিমানটিতে থাকা বৈমানিকরা বিমানের গতি ঠিকভাবে বুঝতে পারেনি৷ ফলে যেখানে বিমানটির সামনের অংশ নীচের দিকে রাখা উচিত ছিল, সেখানে তারা করেছেন উল্টো৷ ফলে খুব দ্রুতই বিমানটির নীচের দিকে নামতে থাকে এবং বিধ্বস্ত হয়৷ আল্যাঁ বুইয়ার বলেন, ‘‘অটো পাইলট অকেজো হওয়ার পর সহ-বৈমানিক বলেছিলেন: আমি নিয়ন্ত্রণ নিয়েছি৷ কিন্তু তিনি বড় বেশি দিক-পরিবর্তন করেন এবং জয়স্টিকে বড় বেশি টান দেন৷ আসলে বৈমানিকদের সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এত উচ্চতায় ‘ম্যানুয়ালি' বিমান চালনার মতো প্রশিক্ষণ থাকে না৷''

স্পিড সেন্সর এবং অটো পাইলট কাজ না করার পরও বিমানটির নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখা সম্ভব ছিল বলে মত প্রকাশ করেন বুইয়ার৷ সেটি অবশ্য এধরনের পরিস্থিতি সম্পর্কে সম্যক ধারণা আছে এরকম একজন মনোযোগী বৈমানিকের ক্ষেত্রে সম্ভব বলে জানান তিনি৷ বলাবাহুল্য, এয়ার ফ্রান্সের উড়ালে যখন জটিলতা শুরু হয়, তখন মূল ক্যাপ্টেন তাঁর সহ-বৈমানিকদের দায়িত্বে রেখে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন৷

এয়ার ফ্রান্সের বিমান দুর্ঘটনার কারণ জানাতে দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সদস্যদেরকে আমন্ত্রণ জানায় বিইএ৷ প্যারিসের বাইরে সংস্থাটির কার্যালয়ে পাঁচ জুলাই সমবেত হন অনেক নিহতের পরিবারের সদস্যরা৷ তদন্ত প্রতিবেদন অবশ্য এদের অনেককে সন্তুষ্ট করতে পারেনি৷ কাইকো মুরিনিয়ো তাদের একজন৷ বিমান দুর্ঘটনার নিজের কন্যাকে হারিয়েছেন তিনি৷ দুর্ঘটনায় নিহত ব্রাজিলের নাগরিকদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একটি সংগঠনও তৈরি করেছেন মুরিনিয়ো৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয়েছে, তারা সবসময় বৈমানিকদের ত্রুটির কথা বলছেন, যা আমি একদমই বিশ্বাস করি না৷'' তবে জন ক্লেমেন্স নামক আরেক ব্যক্তির বক্তব্য ভিন্ন৷ তদন্ত প্রতিবেদন পড়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন তিনি৷ ক্লেমেন্স বলেন, ‘‘আগের চেয়ে অনেক বেশি তথ্য এখন জানা যাচ্ছে৷ কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে অনেক কাজ করেছে এবং নিরাপত্তার খাতিরে বেশ কিছু সুপারিশও করেছে৷''

বলাবাহুল্য, আগামী মঙ্গলবার এসংক্রান্ত আরেকটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন নিহতদের পরিবারের কাছে উপস্থাপন করা হবে৷ প্রকাশিতব্য প্রতিবেদনেও দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বৈমানিকদের ভুল এবং স্পিড সেন্সর কাজ না করার বিষয়টিই উল্লেখ করা হয়েছে৷ বার্তাসংস্থাগুলো ইতিমধ্যেই এই বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে৷

এআই / এসবি (ডিপিএ/এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য