1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এশীয়দের মধ্যে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের অভ্যাস

১০ জুলাই ২০০৯

এশীয়দের মধ্যে সুষম এবং স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের অভ্যাস গড়ে উঠছে দিন দিন৷ খাবার এবং পানিয় এশিয়াতে বাজারজাত করে লন্ডনের এমন একটি প্রতিষ্ঠান বিজনেস মনিটরের, প্রকাশিত এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে৷

https://p.dw.com/p/Ikxp
এমন মন ভোলানো বিজ্ঞাপন আর টানছে না এশীয়দেরছবি: AP

তারা বলছে স্বাস্থ্যকর খাবার এখন মানুষের খাদ্য তালিকার পাঁচ ভাগ ইতোমধ্যেই দখল করে নিয়েছে৷

এশীয়ার বেশিরভাগ দেশেই খাদ্যের প্রধান অংশ জুড়ে থাকে ভাত বা গম ৷ অর্থ্যাৎ কার্বহাইড্রেট আছে এমন খাবার৷ আর বর্তমান ফাস্ট ফুডের যুগে, মাংস বা চিজ এখন তরুণ প্রজন্মের প্রধান খাবার৷ যেমনটা দেখা যায় চীনের এই যুবকের ক্ষেত্রে৷ সে বলছে তার যা ওজন তা থেকে ৩০ কেজি কম করা প্রয়োজন৷ তার জন্য প্রয়োজন খাদ্য তালিকায় এক বিশাল পরিবর্তন৷ তার নিজের ভাষ্য মতে, সে যখন বই পড়ে জানতে পারলো যে তার খাদ্য তালিকাই তার ওজন বৃদ্ধির জন্য দায়ী তখন সে তার শপিং লিস্টে সজ্বি, দই আর পর্যাপ্ত ভিটামিন আছে এমন খাবার নিয়ে আসলো৷ এখন সে দিন দিন তার ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হচ্ছে ৷ কারণ গত এক মাসে তার ১৩ পাউন্ড বা ৬ কেজি ওজন কমেছে৷

বিজনেজ মনিটর তাদের সমীক্ষায় বলছে, কাজের ধরণ এবং খাদ্যাভ্যাস দুয়ে মিলে মানুষকে স্থুল এবং রোগাক্রান্ত করে ফেলে৷ যার দুটোই ব্যাপক হারে রয়েছে এশীয়দের মধ্যে৷

Miss Asia Pacific Miss Wahlen in Manila 2003
এশীয়ানরা এখন আগের থেকে অনেক সচেতনছবি: dpa

বিজনেজ মনিটরের প্রধান লিন্ডসি এন্ডারসন বলছেন, অতিরিক্ত ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবার সুষম খাবার থেকে মানুষকে দিন দিন দূরে রাখার চেষ্টা করছে৷ তবে এশিয়ার মানুষ এখন আগের থেকে অনেক সচেতন৷ যদিও ব্যাপারটি বুঝতে এশীয়দের অনেক সময় লাগছে৷ কারণ দীর্ঘ দিনের খাদ্যাভাস অল্প সময়ে পরিবর্তন করা সম্ভব নয়৷

বিজনেজ মনিটর দাবি করছে, গেল বছর তারা ২০ বিলিয়ন ডলারের সুষম খাবার যেমন, গমের তৈরি খাবার, প্রকৃতি থেকে উৎপাদিত হয় এমন দই, বা সয়াবীজ জাপানসহ এশিয়ার অন্যান্য দেশে রফতানি করতে পেরেছে৷ আর ভিটামিন বা আমিষ আছে এমন খাবার ২০০৬ সালে তারা বিক্রি করেছে ১৪ বিলিয়ন ডলার৷

সিঙ্গাপুর কেন্দ্রীক অপর একটি খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, সীবোস বলছে তাদের স্বাস্থ্যকর পানীয়র বিক্রি ৩৩ ভাগ বেড়েছে ২০০৪ থেকে ২০০৮ এর মধ্যে৷

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডাব্লিউএইচও এর হিসাব মতে, চীনে ২৩ ভাগ মানুষের শরীরে অতিরিক্ত ওজন রয়েছে ৷ ডায়বেটিকস এখানকার মানুষের একটি প্রধান রোগ হিসাবে চিহ্নিত্ করে প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ২০২৫ সালের মধ্যে এই রোগীর সংখ্যা ৪২ বিলিয়নে দাঁড়াবে৷ অপরদিকে ভারতের পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে ডাব্লিউএইচও বলছে, দেশটিতে বর্তমানে ৪০ মিলিয়ন ডায়বেটিকস রোগী আছে যা ২০২৫ সালের মধ্যে দ্বিগুণ হবে৷

তবে পরিস্থিতি আগের চেয়ে পরিবর্তিত হচ্ছে ৷মালয়েশিয়া এবং হংকংএ হরলিক্স কোম্পানির কোমল পানীয় বিক্রি করেন এমন একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান চারু হ্যারিস বলছেন, বর্তমানে এশীয়ানরা স্বাস্থ্য বিষয়ে আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন৷ তাই স্বচ্ছতার সঙ্গে বাজার তৈরি করা এখন অনেক সহজ৷ তিনি আরো বলছেন, স্বাস্থ্যকর কোন খাবার বিক্রিকরা অনেক সহজ৷ শুধু এতোদিন যা প্রয়োজন ছিল তা হলো জনগনের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা৷ যা আস্তে আস্তে বাড়ছে৷

আর এই বিষয়টি খেয়াল রেখেই, বিশ্বখ্যাত কোমল পানীয় প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান যেমন কোককোলা, পেপসি বা নেসলে বলছে তারা এশীয়দের জন্য এমন কিছু পানীয় আনছে যা একদিকে যেমন স্বাস্থ্যকর, অন্যদিকে মুখরোচকও বটে৷

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আরো বলছে, এশিয়াতে ২০০৫ সালে ছিল তিন জনের একজন অতিরিক্ত ওজনের অধিকারী৷ আর ২০১৫ সালে মোট জনসংখ্যার ৫৩ ভাগ পুরুষ এবং ৪৪ ভাগ মহিলা অতিরিক্ত ওজনের অধিকারী হবেন৷ যা তাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য হুমকীস্বরুপ৷ যদিও সংস্থাটি তাদের গবেষণায় এও বলছে যে, মানুষ এখন স্বাস্থ্যকর খাবারকে বিশেষ করে ভিটামিন এবং সব্জীকে তাদের খাদ্য তালিকায় চোখ বন্ধ করে জায়গা দিচ্ছে৷

প্রতিবেদক: ঝুমুর বারী

সম্পাদনা: আবদুস সাত্তার