1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এর্দোয়ান যখন একা

টোমাস সাইবার্ট/এসি৯ এপ্রিল ২০১৫

তুর্কি প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ানের তেহরান সফর আরব এবং ইরানি, দু'পক্ষেরই মন রাখার প্রচেষ্টার অঙ্গ৷ তবে আঞ্চলিক রাজনীতিতে এর বিশেষ কোনো মূল্য নেই, বলে টোমাস সাইবার্টের ধারণা৷

https://p.dw.com/p/1F5Eg
Türkei Erdogan bei Willkommenszeremonie in Ankara
ছবি: Reuters/Umit Bektas

এর্দোয়ান প্রথমে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাববৃদ্ধির আকাঙ্ক্ষা নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন – এর পরেই তাঁকে তেহরানে গিয়ে ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানির সঙ্গে মোলায়েম আলাপচারী করতে শোনা গেল৷ এটা নিছক এর্দোয়ান: একদিকে বাগাড়ম্বর, অন্যদিকে ঠান্ডা মাথার রাজনীতি৷

তুরস্ক যে এলাকার অন্যান্য শক্তির থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, দীর্ঘদিন ধরে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় এর্দোয়ানের নীতিই সে জন্য দায়ী, বিশেষ করে তাঁর একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষামূলক প্রকল্প৷ এর্দোয়ানের ইসলামপন্থি-রক্ষণশীল সরকার তথাকথিত আরব বসন্তকে দেখেন গোটা এলাকায় তুরস্কের প্রভাব বৃদ্ধি এবং সুন্নি মুসলমান দেশগুলির সঙ্গে সখ্যতা সৃষ্টির সুযোগ হিসেবে৷

সে গুড়ে বালি

এর্দোয়ানের সে পরিকল্পনা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে৷ মিশরে এর্দোয়ানের মিত্র মোহাম্মদ মুর্সিকে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক বাহিনী – সে যাবৎ দু'টি দেশের সম্পর্ক তিক্ত৷ যেহেতু অপরাপর আরব দেশের নেতৃবর্গ নিজেদের ক্ষমতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে মুর্সির মুসলিম ব্রাদারহুডকে বিপজ্জনক বলে মনে করেন, সেহেতু সৌদি আরব ও অপরাপর প্রভাবশালী দেশের সঙ্গে তুরস্কের মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়৷

যুগপৎ ইসরায়েল, ইরাক এবং সিরিয়ার সঙ্গেও তুরস্কের সম্পর্কের নাটকীয় অবনতি ঘটে৷ সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আহমেত দাভোতলু এককালে ঘোষণা করেছিলেন যে, তুরস্কের লক্ষ্য হলো, প্রতিবেশীদের সঙ্গে ‘‘সমস্যাবিহীন'' সম্পর্ক; আজ সেটা প্রতিবেশীদের সঙ্গে ‘‘কোনো সম্পর্ক নেই'', এই পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে, বলে নিন্দুকেরা ব্যঙ্গ করে থাকেন৷ এর্দোয়ান ভক্তরা অবশ্য এই পরিস্থিতির নাম দিয়েছেন: ‘‘সম্মানজনক বিচ্ছিন্নতা''৷

অগত্যা?

ইরানের সঙ্গে সম্পর্কে কোনো বড় সংকট দেখা দেয়নি৷ তা সত্ত্বেও সুন্নি ন্যাটো সদস্য তুরস্ক এবং মার্কিন-বৈরি শিয়া দেশ ইরানের মধ্যে প্রথাগত প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রায়ই বিরোধের অবতারণা ঘটায় বৈকি৷

ইয়েমেন সংঘাতে সম্প্রতি এর্দোয়ান সুন্নি মহলের আস্থা পুনরার্জন করার সুযোগ পেয়েছিলেন৷ আংকারা ইয়েমেনে সৌদি সামরিক অভিযান সমর্থন করে, এমন আভাস দেয়; অপরদিকে এর্দোয়ান ইরানের আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারের অভিলাষের সমালোচনা করেন৷ এর ফলে উপসাগরীয় দেশগুলি তুষ্ট হলেও, তেহরানে এমন উষ্মার সৃষ্টি হয় যে, এর্দোয়ানের ইরান যাত্রা বানচাল করা হবে কিনা, তা নিয়েও কথা ওঠে৷

তেহরানে মরসুম কেমন?

এর্দোয়ান তাঁর যাত্রার নির্ঘণ্ট অপরিবর্তিত রাখেন, এমনকি ইয়েমেন সংঘাতে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দেন৷ তিনি শিয়া-সুন্নির পার্থক্য করেন না, সকলেই তাঁর কাছে মুসলমান, বলেন এর্দোয়ান৷ সাম্প্রতিক পরমাণু চুক্তির পর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা প্রত্যাহার করা হলে, তুরস্ক ইরানে আরো বেশি পণ্য রপ্তানি করতে আগ্রহী – জানান এর্দোয়ান – যার ফলে তাঁকে আবার সুন্নি আরব দেশগুলির রোষের মুখে পড়তে হতে পারে৷

আজ নয়তো কাল, স্বল্প কিংবা দীর্ঘ মেয়াদে তুরস্ককে আরব তথা ইরানিদের মধ্যে এ কুল ও কুল করতে গিয়ে হোঁচট খেতে হবে৷ তেহরানের মন রাখলেই শুধু কাজ চলবে না৷ অথচ এ অঞ্চলের রাজনীতি সম্পর্কে যে তুরস্কের কোনো বিশেষ পরিকল্পনা আছে, এমনও তো মনে হচ্ছে না৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য