1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বেকায়দায় চিফ হুইপ

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

ঋণখেলাপির অভিযোগ আর ক্রেস্টের বদলে ক্যাশের কথা বলে বেকায়দায় আছেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এবং জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ৷ ঋণখেলাপির অভিযোগের কারণে হাইকোর্ট তাঁর সংসদ সদস্য পদের বৈধতা নিয়ে রুল দিয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/1B61c
ছবি: DW

পটুয়াখালীর বাউফল পৌরসভার মেয়র জিয়াউল হক হাইকোর্টে এক রিট আবেদনে বলেছেন, চিফ হুইপ এবং পটুয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ একজন ঋণখেলাপি৷ ঋণখেলাপি হওয়ার পর তিনি কীভাবে সংসদ সদস্য নির্বাচন করেছেন এবং সংসদ সদস্য পদে বহাল আছেন? তিনি আদালতে তাঁর সংসদ সদস্য পদ খারিজের আবেদন জানান৷ সোমবার আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী এবং বিচারপতি হাবিবুল গনির বেঞ্চ রুল জারি করেছেন৷ আদালত জানতে চেয়েছেন তিনি কোন কর্তৃত্ব বলে সংসদ সদস্য আছেন৷

রুলে আদালত আ স ম ফিরোজ ছাড়াও জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব, নির্বাচন কমিশনের সচিব, আইন সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর পরিচালক, সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ব্যাংকের বৈদেশিক বিনিয়োগ শাখার উপমহাব্যবস্থাপক, পটুয়াখালী জুট মিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট এলাকার রিটার্নিং কর্মকর্তাকে চার সপ্তাহের মধ্যে এর জবাব দিতে বলেছেন৷

Dhaka Bangladesch 7 von 19
ছবি: DW/Harun Ur Rashid Swapan

রিটের আইনজীবী ব্যারিস্টার সিদ্দিকুর রহমান খান জানান, পটুয়াখালী জুট মিলস লি.-এর পরিচালক আ স ম ফিরোজ৷ ওই প্রতিষ্ঠানের নামে সোনালী ব্যাংক থেকে নেয়া ঋণ ২০০৯ সাল থেকে খেলাপি৷ পুনঃতফসিলে সোনালী ব্যাংক ১৩ কোটি ৫১ লাখ ৮২ হাজার ৬৪ টাকা মওকুফ করে৷ এখনো সেখানে তাঁর ২০ কোটি ৪০ লাখ ২৩ হাজার ২১৩ টাকা ঋণ রয়েছে৷ আর মনোনয়নপত্র দাখিলের চার দিন আগে ২৭ নভেম্বর ঋণ পুনঃতফসিল করেন আ স ম ফিরোজ৷ বাংলাদেশ ব্যাংক পরদিন তা অনুমোদন করে৷ ফলে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১২ (এম) ধারা অনুসারে তিনি সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্য নন৷

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে মনোনয়নপত্র দাখিলের অন্তত ৭ দিন আগে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করতে হয়৷ কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর তথ্যমতে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি খেলাপি ছিলেন৷

ব্যারিস্টার সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, আইন অনুসারে কোনো ঋণ তিনবারের বেশি পুনঃতফসিল করা যায় না৷ অথচ আ স ম ফিরোজের ঋণ এ নিয়ে মোট ৮ বার পুনঃতফসিল করা হয়েছে৷

এদিকে গত শুক্রবার আ স ম ফিরোজ তাঁর নিজ এলাকা পটুয়াখালীতে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ক্রেস্টের বদলে নগদ টাকা চেয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন৷ সেদিন তিনি বলেন, ‘‘আগামীকাল দলীয় কার্যালয়ে সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত বসবো৷ যদি কারুর উপঢৌকন দেয়ার ইচ্ছা থাকে, তবে আর এই ক্রেস্ট না৷ ক্যাশ চাই, ক্যাশ (নগদ টাকা) চাই৷''

তবে পরে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, নিজের জন্য নয়, দলের জন্য টাকা চেয়েছেন তিনি৷ টিআইবি এক বিবৃতিকে এতে গণতন্ত্রের জন্য অশনি সংকেত বলে মন্তব্য করেছে৷ আর সুশাসনের জন্য নাগরিক বা সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, তিনি নগদ টাকা চেয়েছেন৷ এখন ব্যাখ্যা দিচ্ছেন৷ তবে তাঁর আচরণ দুঃখজনক৷ তিনি আরও বলেন, নির্বাচনটাই এখন টাকার খেলায় পরিণত হয়েছে৷ তাঁর কথায় আরো একবার তা প্রমাণিত হল৷ বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আ স ম ফিরোজ ঋণখেলাপি বলে অভিযোগ করা হয়েছে৷ তিনি আশা করেন, অভিযোগ প্রমাণ হলে আইনি প্রক্রিয়া যথাযথভাবে অনুসরণ করা হবে৷ তিনি বলেন, ঋণখেলাপি প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী তাঁর সংসদ সদস্য পদ থাকবেনা৷ আর সংসদ সদস্য পদ না থাকলে চিফ হুইপের পদও হারাবেন৷

আ স ম ফিরোজ এ নিয়ে ৫ বার পটুয়াখালী-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন৷ তিনি চিফ হুইপ হওয়ার আগে সংসদের হুইপের দায়িত্বও পালন করেছেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য