উত্তাল মিশর
মিশরের অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিলেন আদলি মনসুর৷ এবার দ্রুত নির্বাচনের পালা৷ একটানা বিক্ষোভের পর বুধবার সামরিক বাহিনী নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুরসি-কে অপসারণ করে৷
শপথ নিলেন অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট
আদলি মনসুর এতকাল সাংবিধানিক আদালতের প্রধান ছিলেন৷ আপাতত তাঁর হাতেই ক্ষমতার রাশ চলে এলো৷ শপথ গ্রহণ করে তিনি মুসলিম ব্রাদারহুড-এর প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন৷ প্রেসিডেন্ট মনসুর বলেন, তারাও দেশের অংশ এবং জাতির ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তাদের অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানানো হলো৷
নতুন নির্বাচনের ঘোষণা
আগামী নির্বাচন পর্যন্ত দেশ চালাবেন মনসুর৷ সর্বদলীয় এক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শীর্ষে থাকবেন তিনি, যদিও সেই সরকারের রূপরেখা এখনো স্পষ্ট নয়৷ প্রতিরক্ষামন্ত্রী আবদেল ফাতাহ আল সিসি (ছবিতে দেখা যাচ্ছে) এক টেলিভিশন ভাষণে অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনের পরিকল্পনা তুলে ধরেন৷ নতুন নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনো স্থির করা হয় নি৷
সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি
কায়রোর পরিস্থিতি আপাতত শান্ত৷ এর অন্যতম প্রধান কারণ অবশ্যই ক্ষমতাকেন্দ্রে রদবদলের পর গোটা শহরে সৈন্যদের উপস্থিতি৷ যেমন গিজা এলাকায় এই সাঁজোয়া গাড়িটি দাঁড়িয়ে রয়েছে৷ কাছেই কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়৷
দুই পক্ষের সংঘর্ষ
মুরসির অনুগামী ও বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষে কায়রোর উত্তর শহরতলি, আলেক্সান্ড্রিয়া সহ দেশের কিছু প্রান্তে হতাহতের খবর পাওয়া গেছে৷
তাহরির চত্বরে উৎসব
মুরসি ক্ষমতাচ্যুত হবার পর কায়রোর তাহরির চত্বরে লক্ষ লক্ষ মানুষের জমায়েত দেখা যায়৷ সামরিক বাহিনী অবিলম্বে জানিয়ে দিয়েছিল যে এক বেসমারিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করে আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷
আনন্দে আত্মহারা
কয়েক দিন ধরে গণবিক্ষোভের পর মুরসি-বিরোধীরা সামরিক বাহিনীর পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে৷ মুরসির নেতৃত্বে সরকার গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হলেও অনেকেই ক্ষুণ্ণ হয়েছিল৷ তাদের অভিযোগ, মুরসি দেশের মধ্যে চরম বিভাজনের সৃষ্টি করেছিলেন ও মানুষের জীবন দূর্বিসহ করে তুলেছিলেন৷
বেপরোয়া সমর্থক
মুসলিম ব্রাদারহুড-এর সদস্যরা ও প্রেসিডেন্ট মুরসির অন্যান্য সমর্থকরা কায়রোর এক মসজিদে তাদের প্রিয় নেতার ছবি তুলে ধরেছে৷ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে তখন সামরিক বাহিনীর বক্তব্য প্রচারিত হচ্ছিল৷
মুসলিম ব্রাদারহুড-এর রোষ
মুরসি নিজে সামরিক বাহিনীর ঘোষণাকে ‘অভ্যুত্থান’ হিসেবে বর্ণনা করেন ও এই পদক্ষেপের নিন্দা করেন৷ তাঁর দলের সদস্যদেরও একই মত৷ চরম ক্ষোভ ও রোষের সঙ্গে তারা প্রেসিডেন্টের অপসারণের প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে৷
সামরিক বাহিনীর ‘রোডম্যাপ’
‘আরব বসন্ত’-এর সময় সামরিক বাহিনীর ভূমিকা এখনো স্পষ্ট হয় নি৷ এখন তারা মিশরের সমাজকে শক্তিশালী করে তোলার ঘোষণা করেছে৷ তবে এই পরিকল্পনার খুঁটিনাটি এবং সেই প্রক্রিয়ায় মুসলিম ব্রাদারহুড-কে কতটা শামিল করা হবে, সে সব এখনো স্পষ্ট নয়৷
তরুণ বিপ্লবী
সামরিক বাহিনী যখন বিরোধীদের সঙ্গে সংঘাত মেটানোর জন্য সময়সীমা স্থির করে দিয়েছিল, তখনই তারা বলেছিল, যে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তরুণ প্রজন্মকে আরও গুরুত্ব দিতে হবে৷ কারণ তরুণদের উদ্যোগেই এই ‘অসাধারণ বিপ্লব’-এর সূচনা ঘটেছে৷