1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইরাকে মানবেতর জীবনযাপন

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৯ জুলাই ২০১৪

ইরাকে বাংলাদেশিরা এক ভীতিকর অবস্থার মধ্যে আছেন৷ তাঁরা শিকার হচ্ছেন নির্যাতনের৷ তাঁরা শিয়া-সুন্নি উভয় পক্ষের হাতেই মার খাচ্ছেন৷ অনেকে দেশে ফিরে আসতে চাইলেও সুযোগ পাচ্ছেন না৷ আর কেউ কেউ মানবেতর জীবনযাপন করছেন৷

https://p.dw.com/p/1CYHQ
ছবি: Reuters

ইরাকের বিভিন্ন স্থানে কর্মরত ৪১ জন বাংলাদেশি মঙ্গলবার দেশে ফিরে এসেছেন৷ সকালে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এসে পৌঁছান তাঁরা৷ তাঁদের কথায়, ইরাকের বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশিরা খুবই ভীতিকর অবস্থায় আছেন৷ অনেক সময় ইরাকি পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে তাঁদের নির্যাতনের শিকারও হতে হচ্ছে৷

বেশ কয়েকজন ইরাক ফেরত শ্রমিক জানান, শুধু সুন্নি বিদ্রোহী নয়, তাঁরা শিয়া নিরাপত্তা বাহিনীর হাতেও নির্যাতিত হয়েছেন৷ সুন্নি পরিচয় পেলেই পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর লোকেরা তাঁদের ওপর নির্যাতন করেছে৷ বন্দুকের নল ঠেকিয়ে গুলি করার হুমকি দিয়েছে৷ তাই ভয়ে তাঁরা নিজ খরচে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন৷

নির্যাতনের শিকার সাইফুল ইসলাম তাঁর ওপর নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘‘আমার দাড়ি ছিল, পাসপোর্ট আছে৷ তারপরও আমার ওপর অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছে৷ আমার পায়ের গোড়ালিতে বার বার আঘাত করেছে তারা৷''

জিম্মি দশায় নির্যাতনের শিকার অপর এক বাংলাদেশি শ্রমিক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘আমাদের ওপর যে পরিমাণ নির্যাতন হয়েছে, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়৷ সেই ঘটনা মনে পড়লে এখনো আমাদের গা শিউরে ওঠে৷''

শ্রমিকরা জানিয়েছেন, তাঁদের ফিরে আসতে প্রত্যেককে বিমানের টিকিট বাবদ খরচ করতে হয়েছে ৫৫ হাজার টাকা৷ টাকার অভাবে আরো প্রায় ছয় হাজার শ্রমিক দেশে ফিরতে পারছে না বলেও জানান তাঁরা৷

জিম্মি দশা থেকে বাংলাদেশে ফেরত আসা শ্রমিক আবু বকর বলেন, ‘‘আমার বাড়ি থেকে ৫৫ হাজার টাকা দিয়ে টিকেট কেটে পাঠিয়েছে, তাই আমি দেশে আসতে পেরেছি৷ আমার মতো অসংখ্য মানুষ ইরাকে রয়েছেন, যাঁরা এই টাকা যোগার করতে না পারায় দেশে ফিরতে পারছেন না৷''

Irakische Sicherheitskräfte in Kerbela 16.06.2014
রাকের বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশিরা খুবই ভীতিকর অবস্থায় আছেনছবি: Reuters

ইরাকে বাংলাদেশি দূতাবাসের বিরুদ্ধে তাঁরা নির্লিপ্ততার অভিযোগ তুলে বলেন, ‘‘আমাদের ওপর এত অত্যাচার সত্ত্বেও সেখানকার প্রতিনিধি কোনো উদ্যোগ নেয়নি৷ দূতাবাসে ফোন করার পর তারা শুধু বলেছে – ‘আমরা দেখছি'৷''

ফিরে আসা এই শ্রমিকরা বাগদাদ এবং ইরাকের বিভিন্ন শহরের নির্মাণ প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন৷ তাঁরা জানান যে, মসুলে ১,৫০০ বাংলাদেশি আছেন, যাঁরা সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন৷

সরকারি হিসেবে বাংলাদেশের ১৪ হাজার নাগরিক এখন ইরাকে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত৷ তাঁরা প্রধানত নির্মাণ শিল্পে কাজ করেন৷ তবে বাস্তবে সেখানে ৩০ হাজারের মতো বাংলাদেশি শ্রমিক আছেন৷

উল্লেখ্য, গত ১লা জুলাই আরো ২৭ জন বাংলাদেশি নিজ খরচে ইরাক থেকে দেশে ফিরে আসেন৷ যদিও বাংলাদেশ সরকার এর আগে সরকারি খরচে বাংলাদেশিদের ফেরত আনার কথা বলেছিল৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য