1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইরাক নিয়ে মোদীর উদ্বেগ

১৭ জুন ২০১৪

ইরাকের অশান্ত পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে দেশটির সরকার ও জনগণের পাশে দাঁড়াবার সংকল্প ব্যক্ত করেছে ভারত৷ মোদী সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, আল-কায়েদা মদদপুষ্ট জঙ্গিরা যেভাবে একটার পর একটা শহর দখল করছে, তা মেনে নেয়া যায় না৷

https://p.dw.com/p/1CKIA
ছবি: Reuters

ইরাক সংকটে মোদী সরকার ইরাকের ঐক্য ও সুস্থিতির প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করে বলেছে, ইরাকের নিরাপত্তা পরিস্থিতির যেভাবে দ্রুত অবনতি হচ্ছে তাতে ভারত উদ্বিগ্ন৷ আল-কায়েদা জঙ্গিগোষ্ঠীর মদদপুষ্ট আইএসআইএস এবং আইএসআইএল জঙ্গিরা যেভাবে একটার পর একটা ইরাকি শহর দখল করে নিচ্ছে, তাতে ইরাকের নিরাপত্তা এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতা বিপন্ন হয়ে পড়ছে৷ এছাড়া এতে করে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদও মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে, যেটা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না৷ তাই এই আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ইরাক সরকার ও জনগণ যেভাবে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, তাতে ভারত তাদের পাশে আছে৷ গত সোমবার ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে ইরাক পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের দ্ব্যর্থহীন অবস্থানের কথা ঘোষণা করা হয়েছে৷

সেই ঘোষণায় তিনটি বিষয় খুব স্পষ্ট৷ এক, ইরাকের ঐক্য, সুস্থিতি ও সংহতির প্রতি ভারতের সমর্থনের অঙ্গীকার৷ দুই, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের নিন্দা৷ তিন, ইরাকে বসবাসকারী ২০ হাজার ভারতীয়দের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা এবং দরকার হলে স্বদেশে ফিরিয়ে আনা৷

ভারতের আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইরাকের পাশে দাঁড়িয়ে ইরানের হাত মজবুত করেছে দিল্লি৷ কারণ শিয়া সংখ্যাগরিষ্ট দেশ ইরাক এবং ইরান কেউই চায় না সাদ্দাম হোসেনের জমানা আবার ফিরে আসুক, যেসময়ে শিয়া প্রধান দেশ ইরাক শাসন করতো সুন্নি সম্প্রদায়৷ ইরাকের অস্থির পরিস্থিতিতে ইরান একদিকে যেমন পেল ভারতকে, অন্যদিকে কয়েক দশকের বৈরিতা সরিয়ে ইরান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও পরস্পরের কাছাকাছি আসার সুযোগ পেল৷ তবে ভারতকে এক্ষেত্রে বিশেষ সতর্ক পদক্ষেপ ফেলতে হবে, যাতে আরব দুনিয়ার অগ্রণী দেশ সুন্নি শাসিত সৌদি আরব চটে না যায়৷ কারণ সৌদি আরব ইরানের প্রতিস্পর্ধী৷ মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্ব নিয়ে ইরান ও সৌদি আরব একে অপরের প্রতিপক্ষ৷

এদিকে ইরাকের অশান্ত পরিস্থিতির আঁচ পড়তে পারে ভারতের অর্থনৈতিক বাজারে৷ অপরিশোধিত তেলের দাম ইতিমধ্যেই ঊর্ধমুখী৷ এর জেরে ভারতীয় বাজারে বাড়তে চলেছে জ্বালানি, অর্থাৎ পেট্রল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের দাম, এমনটাই আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা৷ তার জেরে বাড়তে পারে মুদ্রাস্ফীতি৷ ভারতের জ্বালানির দুই-তৃতীয়াংশ আমদানি করতে হয়৷ সৌদি আরবের পর ভারতের সব থেকে বড় জ্বালানি রপ্তানিকারক দেশ ইরাক৷

শুধু তাই নয়, ডলারের তুলনায় ভারতীয় টাকার দাম পড়তির দিকে৷ এই সপ্তাহের গোড়ায় ভারতের শেয়ার সূচক নিম্নমুখী৷ তাই ইরাকের চলতি সংকট মোদী সরকারকে এক বড় চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করাবে৷ চলতি খাতে ঘাটতি কমার বদলে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে, যার আঁচ পড়তে পারে আসন্ন কেন্দ্রীয় বাজেটে৷ ২০০৮ সালের বিশ্ব মন্দাবস্থা এখনো পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি৷ তাই ইরাকের সুস্থিতি বিপন্ন হলে মুশকিল হয়ে পড়বে ভারতের আর্থিক পরিস্থিতি৷ মুদ্রাস্ফীতি ইস্যুতে বিরোধী দলগুলি ইতিমধ্যেই অস্ত্র শানাতে শুরু করেছে মোদী সরকারকে নিশানা করে৷ অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি মুদ্রাস্ফীতির কারণ হিসেবে দেখাতে চাইছেন মজুতদারি এবং স্বল্প বৃষ্টিপাতকে৷ এতে অবশ্য আমল দিতে রাজি নয় বিরোধী দলগুলি৷

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি

দেবারতি গুহ