1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইন্দোনেশিয়ার মাউন্ট মেরাপিতে ১শ বছরের মধ্যে ভয়াবহতম অগ্নুৎপাত : ৭৮ জন মৃত

৫ নভেম্বর ২০১০

মাউন্ট মেরাপি আগ্নেয়গিরির ইতিহাসে গত ১শ বছরের মধ্যে এইবারই সবচেয়ে ভয়াবহ আকারের অগ্নুৎপাত ঘটলো৷ এর আগে এই আগ্নেয়গিরিটি থেকে এইরকম ভয়াবহ অগ্নুৎপাত হয়েছিল ১৯৩০ সালে৷ সেইসময়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১,৩৭০ জন৷

https://p.dw.com/p/PzMt
শুক্রবার অগ্নুৎপাতের আগে বৃহস্পতিবারে মাউন্ট মেরাপির ছবিছবি: AP

২,৯৬৮ মিটার উঁচু ইন্দোনেশিয়ার এই আগ্নেয়গিরিটি থেকে আবারো অগ্নুৎপাত হয়ে অন্তত ৭৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন শুক্রবার৷ আহত হয়েছেন কয়েকশ মানুষ৷ মধ্যরাত থেকে নতুন করে অগ্নুৎপাত ও লাভা নির্গত হতে শুরু করে মাউন্ট মেরাপি থেকে৷

তবে শুক্রবারেই প্রথম নয়, জাভার কেন্দ্রস্থলে এই আগ্নেয়গিরিটি থেকে অগ্নুৎপাত শুরু হয় ২৬ অক্টোবর থেকে৷ সেই থেকে আজ পর্যন্ত নতুন করে শুরু হওয়া কয়েকবারের আগ্নুৎপাতে এই পর্যন্ত ১২২ জন প্রাণ হারালেন৷ আগ্নেয়গিরিটির সবচেয়ে কাছাকাছি শহর যোগজাকার্তার সারিতো জেনারেল হাসপাতালের মুখপাত্র ত্রিশনো হেরু নুগ্রহ অন্তত ৭৮ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছেন৷

Merapi Vulkan Ausbruch Indonesien
শুক্রবার অগ্নুৎপাতের পরে মৃত গরুছবি: AP

তবে হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে পুলিশ৷ পুলিশের সঙ্গে কর্মরত একজন চিকিৎসক বলেছেন, ছাইয়ে ঢাকা একটি এলাকায় এখনও ঢুকতে পারা যাচ্ছে না৷ ফলে সেখানে পুড়ে যাওয়া ছাইয়ের নীচে কী আছে - তা কেউ বলতে পারছেন না৷

নতুন করে শুরু হওয়া এই অগ্নুৎপাতে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে পুড়ে যাওয়া বহু গবাদিপশুকে মৃত অবস্থায় পরে থাকতে দেখা গেছে৷এদিকে আগ্নুৎপাতে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোর কৃষকদের কাছ থেকে তাদের সব গবাদিপশু কিনে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুশিলো বামবাং ইয়োধোইয়োনো৷ কৃষকরা যাতে সংকট চলাকালে গবাদিপশুর চিন্তা না করে নিজেদের বাড়িতে ফিরে যেতে পারেন সেইজন্যেই এই ব্যবস্থা৷ এই পর্যন্ত ৭৫ হাজার অধিবাসীকে ঐ অঞ্চল থেকে নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে৷

Flash-Galerie Merapi Vulkan Ausbruch Indonesien
শুক্রবার অগ্নুৎপাতের আগে বৃহস্পতিবার থেকেই কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে৷ছবি: AP

বিশ্বের সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলোর মধ্যে মাউন্ট মেরাপি একটি৷ জাভার কেন্দ্রস্থলের সবচেয়ে জনবহুল অঞ্চলে এই আগ্নেয়গিরিটির অবস্থান হওয়াতে, এটি থেকে অগ্নুৎপাত শুরু হলেই হতাহতের ঘটনা ঘটে৷ উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলো থেকে এখনও ছাই এবং ধোঁয়া উঠতে দেখা যাচ্ছে৷

শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া এই অগ্নুৎপাতে এই পর্যন্ত ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ পর্যন্ত মানুষ গৃহহীন হয়েছেন৷ হাতপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শতাধিক আহত ব্যক্তির শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারাত্মকভাবে পুড়ে গেছে৷ অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক৷ নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই আর্গোমুলিও গ্রামের শিশু বলে জানা গেছে৷ একজন উদ্ধারকর্মী জানান, ‘‘পুড়ে যাওয়া অনেক লাশ পড়ে থাকতে দেখেছি আমরা৷ মারাত্মকভাবে পুড়ে যাওয়া কয়েকজন, আমরা সেখানে পৌঁছানোর পরও বেঁচে ছিলেন৷ একজন মৃতপ্রায় মা তাঁর ৩ বছরের ছেলেটিকে রক্ষা করতে বলেন আমাদের৷ আমরা সেখান থেকে ঐ মহিলার ছেলেসহ ৬ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছি৷ কিন্তু মহিলাটিকে রক্ষা করতে পারিনি, কেননা ঐ জায়গায় এতো প্রচন্ড গরম ছিল যে আমরা আর দাঁড়াতে পারিনি৷’’

প্রতিবেদন: ফাহমিদা সুলতানা

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক