1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সং কন্টেস্টে রাজনীতি ছিল

আন্দ্রেয়াস ব্রেনার / এসি১৮ মে ২০১৩

আগামী ১৮ই মে ইউরোপিয়ান সং কন্টেস্ট বা ইএসসি-এর ৫৮তম সংস্করণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে সুইডেনের মালমোতে৷ বিজ্ঞাপনের ভাষায় তাকে নিছক মনোরঞ্জন বলা হলেও, রাজনীতি মিশে আছে এই গানের প্রতিযোগিতার রন্ধ্রে রন্ধ্রে৷

https://p.dw.com/p/18a4D
Ukraine's Zlata Ohnevytj (L) performs during the first semi-final of the Eurovision Song Contest at the Malmo Opera Hall in Malmo May 14, 2013. The finals of the Eurovision Song Contest will be held on May 18. REUTERS/Janerik Henriksson/Scanpix Sweden (SWEDEN - Tags: ENTERTAINMENT SOCIETY) ATTENTION EDITORS - THIS IMAGE WAS PROVIDED BY A THIRD PARTY. SWEDEN OUT. NO COMMERCIAL OR EDITORIAL SALES IN SWEDEN. NO COMMERCIAL SALES. THIS PICTURE IS DISTRIBUTED EXACTLY AS RECEIVED BY REUTERS, AS A SERVICE TO CLIENTS
ছবি: Reuters/Janerik Henriksson

সূচনায় বলা হতো ইউরোভিশন গ্রঁ প্রি৷ প্রতিযোগিতার নিয়মাবলীতে আজও লেখা আছে: প্রতিযোগিতা চলাকালীন গানের কথা, বক্তৃতা কিংবা ভাবভঙ্গিতে কোনোরকম রাজনৈতিক আভাস-ইঙ্গিত থাকলে চলবে না৷

১৯৫৬ সাল৷ তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে মাত্র ১১ বছর আগে৷ বেলজিয়াম, তৎকালীন পশ্চিম জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, লুক্সেমবুর্গ, ইটালি, ফ্রান্স এবং সুইজারল্যান্ডের বেতার সংস্থাগুলি মিলে যখন এই প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করে, তখন তার একটা উদ্দেশ্য ছিল এককালের বৈরীদের মধ্যে সম্পর্কের স্বাভাবিকীকরণ৷

বিশ্বশান্তি, ভালো কথা – কিন্তু পুটিন?

১৯৮২ সালে জার্মানি প্রথম এই প্রতিযোগিতায় জেতে৷ ইউরোপ জুড়ে শান্তি আন্দোলন তখন চরমে৷ জার্মানির হয়ে নিকোল জেতেন তাঁর সুবিখ্যাত ‘‘আইন বিসিয়েন ফ্রিডেন'' বা ‘একটুখানি শান্তি' গানটি দিয়ে৷ একেও এক হিসেবে বিশ্ব রাজনীতি বলা চলতো৷ ইএসসি-এর আয়োজক ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়ন বা ইবিইউ কিন্তু তা-তে আপত্তি করেনি৷

অথচ ২০০৯ সালে জর্জিয়া থেকে ‘‘উই ডোন্ট ওয়ানা পুট ইন'' গানটি গাওয়ার কথা হলে, ইবিইউ বেঁকে বসে, কেননা গানের শীর্ষকের একটি মানে করা যেতে পারে: ‘আমরা পুটিন'-কে চাই না',‘পুট ইন'-এর মধ্যেই যে ইঙ্গিত লুকিয়ে আছে৷ এর দু'বছর আগেই ইউক্রেনের একটি গানে নাকি ‘‘বিদায় রাশিয়া'' কথাগুলো শোনা গেছে বলে রুশ টেলিভিশনে গানটি সম্প্রচার করা হয়নি৷

এবারও ম্যাসিডোনিয়ার এসমা ও ভ্লাটকোর গাওয়া গানটির ভিডিও-তে ‘বৃহত্তর ম্যাসিডোনিয়ার' গন্ধ পেয়েছেন প্রতিবেশি দেশের মানুষজনেরা৷ কাজেই স্কোপিয়ে সাততাড়াতাড়ি ‘‘ইম্পিরিয়া'' বা ‘সাম্রাজ্য' গানটির বদলে ‘‘প্রেদ দা সে রাজদেনি'' বা ‘ভোরের আগে' গানটি পাঠিয়েছে৷

সমাজ ও রাজনীতি

১৯৯৮ সালে যখন লিঙ্গ পরিবর্তনকারী গায়িকা ডানা ইসরায়েলের হয়ে গাওয়ার সুযোগ পান, তখন ইসরায়েল ও ইউরোপের রক্ষণশীল মহলে প্রতিবাদের ঝড় বয়ে গিয়েছিল৷ ওদিকে সমকামীরা নাকি ইউরোপিয়ান সং কন্টেস্টের বিশেষ ভক্ত৷ তাই ২০০৯ সালে মস্কোর সমকামীরা ইএসসি-এর চূড়ান্ত দিনে একটি ‘গে প্যারেড' করতে চাইলে পুলিশ তাদের লাঠি হাতে বিতাড়ন করে৷

আবার ইউরোপিয়ান সং কন্টেস্ট কর্তৃত্বমূলক দেশগুলির পক্ষে আত্মবিজ্ঞাপনের একটা সুযোগও বটে: ২০০৯ সালে মস্কোয় আয়োজিত ইএসসি ছিল একটি সুবিশাল ব্যাপার৷ অর্থ খরচ করা হয়েছিল দরাজ হাতে, কেননা ভ্লাদিমির পুটিনের সরকারের পক্ষে এটা ছিল একটা প্রেস্টিজের ব্যাপার৷ পুটিন নিজে রিহার্সালে এসেছিলেন৷

তিন বছর পরে আজারবাইজানে আরো চমৎকৃত করার মতো একটি দৃশ্য৷ খোদ ফার্স্ট লেডি মেহরিবান আলিইয়েভা হয়েছিলেন সাংগঠনিক কমিটির প্রধান; প্রেসিডেন্টের জামাতাকে ফাইনাল চলাকালীন ইন্টারভালের সময় মঞ্চে গান গাইবার অধিকার দেওয়া হয়৷ বলতে কি, বাকুতে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের আগেই আজারবাইজানের মতো একটি দেশে ইএসসি-এর আয়োজন করার যৌক্তিকতা নিয়ে বিতর্ক চলে৷ প্রশ্ন ছিল: যে দেশে মানবাধিকার নিয়মিত ভঙ্গ হয়, সেখানে এ ধরনের একটি মনোরঞ্জনের অনুষ্ঠান বিসদৃশ দেখায় কিনা৷ পশ্চিমি দেশগুলিতে এই বিতর্কে চলার ফলে আজারবাইজানের মানবাধিকার কর্মী, বিরোধী রাজনীতিক ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকরা অন্তত কিছুদিনের জন্য ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যমে তাঁদের অবস্থান জ্ঞাপন করার সুযোগ পান৷

মোদের গরব, মোদের আশা

ইএসসি-এর সবচেয়ে কণ্টকিত সমস্যা হল ভাষা সমস্যা৷ ইংরিজিতে না গাইলে গানের কথা কিংবা ভাব অন্যান্য দেশের শ্রোতা-দর্শকদের কাছে বোধগম্য হয় না৷ আবার স্বদেশে প্রত্যাশা থাকে, যে জার্মানির প্রতিনিধিত্ব করছে, সে জার্মানে গাইবে; যে ফ্রান্সের প্রতিনিধিত্ব করছে, সে ফরাসিতে গাইবে৷ বিশেষ করে ফ্রান্সে এ নিয়ে প্রায়ই বিরোধ বাঁধে৷

Autor: Andreas Brenner, Malmö (Schweden) am 14.05.2013 . Thema: Stimmung in Malmö beim Eurovision Song Contest Stichworte: Denkmal Karl X, Eurovision Song Contest, ESC, Malmö Bildbeschreibung: Denkmanl Karl X im Stadtzentrum von Malmö während des ESC 2013
১৮ মে ইউরোপিয়ান সং কন্টেস্ট বা ইএসসি-এর ৫৮তম সংস্করণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে সুইডেনের মালমোতেছবি: DW/A. Brenner

জার্মানদের ভাষা নিয়ে এতটা স্পর্শকাতরতা নেই৷ তারা চায় জিততে৷ তা সে নিকোল জার্মান ভাষায় গেয়েই জিতুন আর লেনা মায়ার-লান্ডরুট ইংরিজিতে গেয়েই জিতুন৷ কিন্তু যে প্রতিযোগিতায় উত্তরের মানুষ উত্তরে নিজেদের প্রতিবেশি দেশগুলিকে; কিংবা বল্কানের মানুষ তাদের প্রতিবেশি দেশগুলিকে চোখ বুজে ভোট দিয়ে থাকে; যেখানে দেশে দেশে ভৌগোলিক ও ঐতিহাসিক বন্ধন অন্য যে কোনো ধরনের সাংগীতিক কি সাংস্কৃতিক বিবেচনার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ: সেই প্রতিযোগিতার (রাজনৈতিক) ফলাফল যে শেষ অবধি কি দাঁড়াবে, তা কে বলতে পারে?

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য