ইউরোপেও ব্যাপক ভ্রুণহত্যা!
১৩ জানুয়ারি ২০১৩আলবেনিয়ায় ১১২ জন ছেলে জন্ম নিলে মেয়ে জন্ম নেয় ১০০ জন৷ কসভো আর মন্টেনেগ্রোয় অবস্থা একটু ভালো৷ সেখানে গড়ে ১০০ জন মেয়ের পাশাপাশি জন্ম নিচ্ছে যথাক্রমে ১১০ ও ১০৯ জন ছেলে৷ সমাজে মেয়ের সংখ্যা এ হারে কমতে থাকলে কী কী সমস্যা দেখা দিতে পারে এ নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে অনেকদিন ধরে৷ তবে ইউরোপীয় সংসদীয় পরিষদ পিএসিই বা পেস-এ সুইজারল্যান্ডের প্রতিনিধি ডোরিস স্টাম্প তুলে ধরেছেন নতুন একটা সমস্যার কথা৷ তাঁর মতে, সমাজে মেয়ের সংখ্যা কমলে পতিতাবৃত্তি বাড়বে, বাড়বে মেয়েদের জোর করে বিয়ে দেয়া এবং আত্মহত্যার ঘটনা৷ শেষ দুটি সমস্যা কিভাবে দেখা দিচ্ছে তা একটু বেশি ব্যাখ্যার দাবি রাখলেও প্রথমটির ব্যাখ্যা খুব সহজ-সরল৷ মেয়ে কমে গেলে ছেলেদের যৌনক্ষুধা মেটানোর সুযোগ কমে আসে৷ এমন পরিস্থিতিতে দরিদ্র পরিবারের মেয়েরা জীবিকা নির্বাহ করতে বেছে নেয় পতিতাবৃত্তি৷ কোথাও মেয়েরা পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধেও চলে আসে এই পথে৷
কিন্তু এসব কথা তো এশিয়া বা আফ্রিকার কিছু উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত দেশের বেলায় প্রযোজ্য৷ ইউরোপেও কেন এই চিত্র? ইউরোপীয় সংসদে জার্মানির সবুজ দলের প্রতিনিধি ফ্রান্সিসকা ব্রান্টনার যা বললেন তাতে ইউরোপের ওই দেশগুলোর সঙ্গে এশিয়া বা আফ্রিকার দেশগুলোর খুব বেশি পার্থক্য নেই৷ তাঁর মতে, ইউরোপের কিছু দেশে কন্যাশিশুর জন্মহার কমছে মূলত দারিদ্র্য, সাধারণ মানুষের মধ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে কম আগ্রহ এবং কুসংস্কারের কারণে৷ আলবেনিয়া, কসোভো এবং মন্টেনেগ্রোর মতো কিছু দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা যে ভালো নয় এটা সবারই জানা৷ ফ্রান্সিসকা ব্রান্টনারের কথায় বেরিয়ে এসেছে আরেকটা সত্য- ওসব দেশেও অনেক মানুষই মনে করে ছেলেই জ্বালিয়ে রাখবে বংশের প্রদীপ৷ সেই প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখা নিশ্চিত করতে মায়ের পেটে কণ্যা সন্তান এসেছে জানা মাত্রই নেয়া হয় গর্ভপাতের ব্যবস্থা৷ ‘আল্ট্রাসাউন্ড'-এর সুবিধা নিয়ে মেয়েভ্রুণ চিহ্নিত করে এই কর্মটি বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, চীন, কোরিয়ার মতো করে ইউরোপের কিছু দেশেও তাই হরদম চলছে ভ্রুণ হত্যা৷
তবে সচেতনতা বাড়ালে সুফল পাওয়া যায় এ শিক্ষা কিন্তু এখন এশিয়ার একটি দেশের কাছ থেকেই নিতে হবে ইউরোপকে৷ দক্ষিণ কোরিয়ায় একসময় ছেলে আর মেয়ের জন্মের অনুপাত ছিল ১১৫ অনুপাত ১০০৷ সেখান থেকে অনুপাতটা এখন দাঁড়িয়েছে ১০৭ এবং ১০০!