1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আয়ারল্যান্ডে শিশুদের গণকবর

৯ জুন ২০১৪

ক্যাথলিক নানদের পরিচালিত একটি ‘মা ও শিশু’ নিবাসের কাছে প্রায় ৮০০ শিশুর একট অনামি গণকবর আবিষ্কৃত হবার পর, আইরিশ সরকার এবার অন্যান্য স্থানেও অনুসন্ধান চালানোর অভিপ্রায় ঘোষণা করেছেন৷

https://p.dw.com/p/1CEHI
প্রতীকী ছবিছবি: picture-alliance/dpa

৭৯৬টি শিশুর এক গণকবর৷ শিশু বলতে নবজাতক থেকে শুরু করে আট বছর বয়সের শিশু৷ কাউন্টি গলওয়ে-র টুয়াম শহরের কাছে একটি ‘মাদার অ্যান্ড বেবি হোম'৷ সেখানকার সেপটিক ট্যাংকে এই গণকবরের খোঁজ পান ইতিহাসবিদ ক্যাথেরিন করলেস৷ সেই মলমূত্র ফেলার চৌবাচ্চাতে কোনোরকম কফিন অথবা স্মৃতিফলক ছাড়াই কবর দেওয়া হয়েছিল মৃত শিশুদের, ১৯২৫ থেকে ১৯৬১ সালের মধ্যে৷ অবিবাহিত মা ও তাঁদের শিশুদের জন্য সেন্ট মেরি'জ হোম নামধারী এই নিবাসটি চালাতেন বন সেকুর সিস্টার্স নামধারী ক্যাথলিক যাজিকা গোষ্ঠী৷

করলেস-এর আবিষ্কার ক্যাথলিক আয়ারল্যান্ডের ভিত নড়িয়ে দিয়েছে বললে হয়ত বেশি বলা হবে৷ অপরদিকে এ-ও সত্য যে, মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এর জরুরি তদন্ত দাবি করেছে এবং আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী এন্ডা কেনি তাঁর কর্মকর্তাদের ‘‘সব সরকারি বিভাগ থেকে উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে'' বিবেচনা করে দেখতে বলেছেন, কেলেঙ্কারির আয়তন কতটা, ঘটনাটাই বা কি, তা একক ঘটনা কিনা এবং দেশের অন্যত্র পরিস্থিতি যাচাই করে দেখার প্রয়োজন আছে কিনা৷''

বিংশ শতাব্দীর সূচনায় আয়ারল্যান্ডে বহু ‘মা ও শিশু নিবাস' ছিল৷ গোঁড়া ক্যাথলিক আয়ারল্যান্ডে অবিবাহিত মায়েদের প্রায়ই এ' ধরনের ‘হোম' ছাড়া কোনো গত্যন্তর ছিল না৷ গতবছর ‘ফিলোমেনা' নামধারী একটি কাহিনিচিত্র অস্কারের জন্য মনোনীত হয়৷ ‘ফিলোমেনা' ছিল ফিলোমেনা লি নামের এক আইরিশ মহিলার কাহিনি৷ পঞ্চাশের দশকে ফিলোমেনা তাঁর অবৈধ সন্তানকে পরিত্যাগ করতে এবং দত্তক হিসেবে দিতে বাধ্য হন৷ ঘটনাটা ঘটে টিপেরারি-র সন রস অ্যাবি বা খ্রিষ্টীয় মঠে৷

মোট কথা হলো, সে আমলে কোনো অবিবাহিত মহিলা সন্তানসম্ভবা হলে, আয়ারল্যান্ডের গোঁড়া রক্ষণশীল সমাজ ‘পতিতা' অপবাদ দিয়ে তাঁকে সমাজচ্যুত করতো৷ অনেক সময় সেই মহিলার পরিবার এবং আত্মীয়স্বজনই তাঁকে পরিত্যাগ করতো৷ এই অবস্থায় সেই অসহায় মহিলার কোনো মাদার অ্যান্ড বেবি হোমে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকতো না৷

হোমগুলির পরিস্থিতিও খুব সুখকর ছিল না৷ ইতিহাসবিদ ক্যাথেরিন করলেস সেন্ট মেরি'জ হোমের ডেথ রেকর্ডগুলি ঘেঁটে দেখেছেন, শিশুরা মারা গেছে অপুষ্টি, নিউমোনিয়া এবং অন্যান্য ছোঁয়াচে রোগে৷ আয়ারল্যান্ডের বর্তমান শিশুমন্ত্রী চার্লি ফ্ল্যানাগান বৃহস্পতিবার আইরিশ সংসদে বলেছেন: ‘‘আয়ারল্যান্ডের মাদার অ্যান্ড বেবি হোমগুলোর ইতিহাসে সমাজের অমানুষিক, নির্মম প্রতিক্রিয়ার প্রতিফলন ঘটেছে৷''

আর এই সব অভাগা শিশুদের মৃতদেহ সেপটিক ট্যাংকে ফেলার রহস্য হলো: সে আমলের রক্ষণশীল ক্যাথলিক শিক্ষা অনুযায়ী বৈবাহিক সম্পর্কের বাইরে যে সব শিশুর জন্ম, তাদের ব্যাপটাইজ করা অথবা পবিত্র গোরস্থানে গোর দেওয়া নিষিদ্ধ ছিল৷

এসি/ডিজি (এএফপি, এপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য