1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি২ মার্চ ২০১৪

ভারতের জাতীয় ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর পরিসংখ্যান বলছে, ২০১২ সালে দেশে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৪৪৫ মানুষ আত্মহত্যা করেছে৷ অর্থাৎ গড়ে দৈনিক ৩৭১টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে৷ এঁদের মধ্যে ২৪২ জন পুরুষ এবং ১২৯ জন মহিলা৷

https://p.dw.com/p/1BHvR
Symbolbild Selbstmord Indien
ছবি: Getty Images/AFP

২০১২ সালে ভারতে প্রতি এক লাখ মানুষেরর মধ্যে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় গড়ে ১২ জন৷ জাতীয় ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর পরিসংখ্যানের হিসেব অনুযায়ী, মোটামুটিভাবে প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ১৫ জন এবং দৈনিক গড়ে ৩৭১ জন আত্মহত্যা করেছেন৷ এর মধ্যে ২৪২ জন পুরুষ এবং ১২৯ জন মহিলা৷ এই হিসেবে ২০১২ সালে গোটা দেশে আত্মহত্যাকেই মুক্তি বলে মনে করেছেন ১ লাখ ৩৫ হাজার ৪৪৫ মানুষ৷ এর মধ্যে অবশ্য পশ্চিমবঙ্গকে ধরা হয়নি৷ কারণ পশ্চিমবঙ্গ থেকে ১৫ হাজার আত্মহত্যার যে পরিসংখ্যান দেয়া হয়েছে, তাতে প্রকৃতিগত বিন্যাসে অস্পষ্টতা রয়ে গেছে৷

এই চরমপন্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে শীর্ষে আছে দক্ষিণী রাজ্য তামিলনাড়ু৷ এক বছরে সেখানে আত্মহত্যা করেছে প্রায় ১৭ হাজার মানুষ৷ দ্বিতীয় স্থানে আছে মহারাষ্ট্র, আত্মহত্যার সংখ্যা সেখানে ১৬ হাজারেরও বেশি৷ পশ্চিমবঙ্গের স্থান তৃতীয় এবং অন্ধ্রপ্রদেশ চতুর্থ৷ ২৮টি রাজ্যে মোট আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে ১ লাখ ৩২ হাজার ৬৬৭ এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ২৭৭৮৷ কেন্দ্রশাসিত লাক্ষাদ্বীপ হলো একমাত্র অঞ্চল যেখানে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে মাত্র একটি৷ কেন্দ্রশাসিত দিল্লিতে এই সংখ্যা প্রায় ১৯০০৷ আত্মহত্যার পথ হিসেবে সবথেকে বেশি পছন্দ গলায় দড়ি ৩৩ শতাংশ, বিষ খাওয়া ২৯ শতাংশ, গায়ে আগুন লাগানো ৮.৫ শতাংশ৷ জানা গেছে, ২০১২ সালে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ গলায় দড়ি দেয়, যার মধ্যে প্রায় ৩৫ হাজার পুরুষ৷ আর বিষ খেয়ে মারা যায় ১৯ হাজার ৪৪৫ জন, যার মধ্যে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার মহিলা৷

মানুষ কেন আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়? মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন, এর প্রধান কারণ আর্থ-সামাজিক, পারিবারিক হিংসা, দাম্পত্য কলহ, জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা, নিঃসঙ্গতা, মাদকাসক্ত, দুরারোগ্য রোগে অসুস্থতা, প্রেম-ভালোবাসায় ব্যর্থতার মতো আবেগজনিত কারণে মানসিক সুস্থিতি বা ভারসাম্য হারিয়ে ফেললে মানুষ তখন এই চরম পথেই মুক্তি খোঁজে৷ দিল্লির নামি-দামি গঙ্গারাম হাসপাতালের মনোচিকিৎসক ডা. মেহতা বলেন, বিবাহিত মহিলাদের তুলনায় বিবাহিত পুরুষদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি৷ মহিলাদের তুলনায় পুরুষরা আবেগের দিক থেকে দুর্বলচিত্ত যেটা প্রচলিত ধারণার বিপরীত৷ এই হার পুরুষদের ক্ষেত্রে যেখানে ৭১ শতাংশ, মহিলাদের ক্ষেত্রে ৬৮ শতাংশ৷ আত্মহত্যার প্রাথমিক লক্ষণ হলো, হাবভাব, আচার-আচরণে পরিবর্তন, মানসিক অবসাদ, নিজেকে গুটিয়ে রাখা, বৈষয়িক জিনিস-পত্র বিলিয়ে দেয়ার ইচ্ছা ইত্যাদি৷ বলেন ডা. মেহতা৷ তাঁর কথায়, এক্ষেত্রে কাউন্সিলিং হলো প্রধান প্রতিষেধক৷

কোনো কোনো মনোবিদের মতে, এই নব্য-উদার যুগের প্রতিযোগিতার ঘোড়দৌড়ে অনেকেই সাফল্যকে জীবনের বীজমন্ত্র হিসেবে ধরে নেন৷ বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম অন্ধের মতো সাফল্যের পেছনে ছুটতে ছুটতে এক সময় থই না পেয়ে মানসিক ও শারীরিক দিক থেকে হয়ে পড়ে বিপর্যস্ত৷ হারিয়ে ফেলে ঘুরে দাঁড়াবার শক্তি৷ ব্যর্থতা থেকে আসে অবসাদ৷ গভীর অবসাদ আর হতাশা থেকে জাগে আত্মহত্যার প্রবণতা৷

মেয়েদের মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, পারিবারিক তথা দাম্পত্য হিংসা তাঁদের আত্মহত্যার দিকে টেনে নিয়ে যায়৷ এই প্রবণতার প্রতিষেধক হিসেবে মনস্তাত্ত্বিকরা জীবনের প্রতি একটা ইতিবাচক সুস্থ মানসিকতা বা দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার কাজে মিডিয়া, প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী এবং স্বেচ্ছাসেবি সংগঠনগুলির বড় ভূমিকার কথা বলেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য