1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাগদাদের পথে জঙ্গিরা

১৩ জুন ২০১৪

নতুন কয়েকটি শহরের দখল নিয়ে ইরাকের রাজাধানী বাগদাদের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে ইসলামি জঙ্গিরা৷ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, ইরাক সরকারকে সহযোগিতার জন্য সব বিকল্পই তিনি বিবেচনা করে দেখছেন৷

https://p.dw.com/p/1CHnI
ISIS Kämpfer Checkpoint bei Mosul 11.06.2014 Karussel
ছবি: Reuters

ইরাকি পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, শুক্রবার সকালে বাগদাদ থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে বাকুডা শহরের কাছে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সুন্নি জঙ্গিদের যুদ্ধ শুরু হয়েছে৷ ২০০৩ সালে অ্যামেরিকান সৈন্যদের অভিযানের পর থেকে আরব, কুর্দি ও সুন্নি অধ্যুষিত বাকুডা শহরে প্রায়ই সংঘাত ও সহিংসতা ঘটে আসছে৷

আল-কায়েদার শাখা ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক অ্যান্ড দ্য লেভান্ট-এর (আইএসআইএল) জঙ্গিরা গত সোমবার এই আক্রমণ শুরুর পর সালাহেদিন প্রদেশের রাজধানী তিকরিত এবং নিনেভে প্রদেশের মসুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়৷ তাঁদের হাতে পূর্বাঞ্চলীয় শহর জালাওলারও পতন হয়েছে বলে দুবাইভিত্তিক আল-আরাবিয়া টেলিভিশনের খবরে জানানো হয়েছে৷

এদিকে বিভিন্ন শহরে সুন্নি জঙ্গিদের আক্রমণের সুযোগে কুর্দি বিদ্রোহীরাও নতুন করে সক্রিয় হয়ে উঠছে৷ সরকারি সৈন্যরা পালিয়ে যাওয়ার পর কিরকুক শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তাঁরা

প্রধানমন্ত্রী নুরি আল-মালিকি জরুরি অবস্থা জারির উদ্যোগ নিলেও পার্লামেন্টে ৩২৫ জন সদস্যের মধ্যে মাত্র ১২৮ জনের সমর্থন পেয়েছেন তিনি৷ দেখা গেছে, অধিকাংশ স্থানেই আইএসআইএল হামলা শুরুর পর সরকারি বাহিনী নিজেদের অবস্থান ছেড়ে পালিয়ে গেছে৷ সুন্নি জঙ্গিদের ঠেকাতে বাগদাদে শিয়া মতাবলম্বীরা স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী গঠন করছে বলে বার্তা সংস্থাগুলোর খবরে জানানো হয়েছে৷

ইরাকের রাষ্ট্রায়াত্ত টেলিভিশন মসুলে জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমান বাহিনীর আক্রমণের ছবি দেখালেও শহরের নিয়ন্ত্রণ আইএসআইএল-এর রয়ে গেছে হাতেই৷ সরকারি বাহিনীর কাছ থেকে দখল করা গাড়িতে চড়ে জঙ্গিরা কুচকাওয়াজ করেছে বলেও খবর পাওয়া গেছে৷

আইএসআইএল-এর মুখপাত্র আবু মোহাম্মদ আল-আদনানি ইতোমধ্যে হুমকি দিয়েছেন যে, তাঁর বাহিনী রাজধানী বাগদাদ দখল করে আরো দক্ষিণে শিয়া অধ্যুষিত কারবালার দিকে এগিয়ে যাবে৷

এমন এক সময়ে আল-কায়েদা সমর্থিত জঙ্গিরা এই তৎপরতা শুরু করেছে যখন যুক্তরাষ্ট্র ইরাক থেকে তাদের সব সৈন্য সরিয়ে নেয়ার শেষ পর্যায়ে রয়েছে৷ অবশ্য জঙ্গি দমনে ইরাকি বাহিনীকে সহায়তার জন্য ওয়াশিংটন সব বিকল্পই খোলা রেখেছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জানিয়েছেন৷

তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা কোনো বিকল্প বাদ দিচ্ছি না৷ জিহাদিরা যাতে ইরাক বা সিরিয়ায় তাঁদের অবস্থান আরো শক্তিশালী করতে না পারে, তা নিশ্চিত করা আমাদের জন্য জরুরি৷''

হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জে কার্নি এর ব্যাখ্যায় বলেন, স্থল অভিযানের কথা যুক্তরাষ্ট্র আপাতত ভাবছে না৷ তবে আকাশপথে অভিযানের সম্ভাবনা ওবামা উড়িয়ে দেননি৷

ইরাকের সাবেক একনায়ক সাদ্দাম হোসেনের দল বাথ পার্টির সদস্যরা আইএসআইএল-এ যোগ দিতে শুরু করায় সুন্নি মতাবালম্বী এই জঙ্গিরা সম্প্রতি নতুন করে সংগঠিত হয়৷ বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সেনা প্রত্যাহার বিলম্বিত করতে পারে৷ অথবা কোনো একটি পক্ষকে সমর্থন দিতে পারে, তবে তাতে গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতির আশঙ্কা থাকবে৷

মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনীর অভিযানে ২০০৩ সালে ইরাকের স্বৈরশাসক সাদ্দাম হোসেন উৎখাত হন৷ সেই যুদ্ধের পর থেকে ইরাকে কখনোই পুরোপুরি শান্তি ফেরেনি৷ জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, গত বছর শিয়া ও সুন্নি মতাবলম্বীদের সংঘাত এবং জঙ্গি হামলায় প্রায় নয় হাজার মানুষ নিহত হয়েছে৷ চলতি বছর কেবল মে মাসেই নিহত হয়েছেন অন্তত ৮০০ জন৷

জেকে/ডিজি (এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য