1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইন্দোনেশিয়ায় বিমান-দুর্ঘটনা

১১ মে ২০১২

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর রাশিয়ার বানানো প্রথম যাত্রীবাহী সুখোই জেট বিমানটি ভেঙে পড়লো ইন্দোনেশিয়ায়৷ নিহত যাত্রীদের দেহাবশেষ মিলছে, বিমানের ভগ্নাংশ মিলেছে এক সুপ্ত আগ্নেয়গিরির পাশে৷

https://p.dw.com/p/14stL
ছবি: AP

সদ্য তৈরি করা হয়েছিল বিমানটিকে৷ নাম রাখা হয়েছিল সুখোই জেট৷ সুখোই শুনলেই যে জঙ্গি বিমানের কথা মনে হয়, এ কিন্তু তা নয়৷ এহল সাধারণ যাত্রীবাহী জেট বিমান৷ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যাকে যাত্রী পরিবহণের কাজে লাগাবার স্বপ্ন দেখছিল রাশিয়া৷ যে কারণে এই সুখোই জেটকে ইন্দোনেশিয়ায় উড়িয়েই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল রাশিয়া থেকে৷ কারণ সেখানে চলছিল একটা মস্ত বড় মাপের আন্তর্জাতিক বিমান মেলা৷ বা এভিয়েশন ফেয়ার৷ যে মেলায় বিশ্বের তাবড় যাত্রীবাহী বিমান পরিষেবা সংস্থা এবং নির্মাণকারী সংস্থারাও হাজির ছিল৷

মেলা শেষ হয়ে যাওয়ার পর ইন্দোনেশিয়ার কিছু ব্যবসায়ী এবং কিছু সাংবাদিক, রুশ দূতাবাসের কিছু অফিসার সহ মোট আটজন রুশ নাগরিক, বিমানের পাইলট এবং অন্যান্য কর্মচারী, এক ফরাসি এবং এক মার্কিন নাগরিক আর দুইজন ইটালিয়ান নাগরিক সহ মোট ৪৫ জনকে নিয়ে একটু প্রমোদভ্রমণে গিয়েছিল বিমানটি৷ কেমন কাজ করছে রাশিয়ার তৈরি সুপারজেট, সেটা দেখতেই সকলের যাওয়া৷ ইন্দোনেশিয়ার হালিম পেডানাকুসুমা বিমানবন্দর থেকে আকাশে ৬০০০ ফিট ওঠা পর্যন্ত বিমানটির সঙ্গে বেতার সংযোগ ছিল৷ তারপরেই সবকিছু বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে৷ বৃহস্পতিবার সকালে একটি উদ্ধারকারী দল মাউন্ট সালাকের উদ্দেশে যাত্রা করে৷ যেখানে বিমানটি ভেঙে পড়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ দুর্ভেদ্য, গভীর জঙ্গলের মধ্যে ভেঙে পড়া  বিমানের ধ্বংসাবশেষ এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি৷ জানাচ্ছে উদ্ধারকারী দল৷ তার কারণ, যেখানে বিমানটি ভেঙে পড়েছে তা এতটাই দুর্ভেদ্য, যে সেখানে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব৷ তবে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনের দেহাবশেষ ছড়িয়ে পড়েছে জঙ্গলের মধ্যে৷ সেরকম কিছু মৃতদেহ উদ্ধার করাও গেছে৷ তবে উদ্ধারকারী দলের মতে, বিমানের যাত্রীদের কেউই বেঁচে নেই৷

হেলিকপ্টার থেকে তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সম্ভবত ৭,২৫৪ ফিট উঁচু মাউন্ট সালাক পর্বতমালার একটা পাথুরে দেওয়ালে ধাক্বা খেয়েছিল রাশিয়ার একেবারে নতুন সুখোই সুপারজেট৷ ছবি যদিও তেমন স্পষ্ট নয়, তবে তার থেকে বোঝা যাচ্ছে যে নীচে সাদা রংয়ের কিছু একটা পড়ে রয়েছে জঙ্গলের মাটিতে৷ সম্ভবত সেটাই এই বিমানের ধ্বংসাবশেষ বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ যেখানে এই বিমানের ধ্বংসাবশেষ মিলেছে সে জায়গাটি হল একটি ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরির ঠিক পাশেই৷

দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে দ্বিমত রয়েছে বিভিন্ন মহলের৷ বিমানের কোনো যান্ত্রিক ত্রুটির ফলে এই দুর্ঘটনা কিনা - তা এ পর্যন্ত স্পষ্ট নয়৷ বিমানটি যিনি চালাচ্ছিলেন সেই রুশ পাইলট আলেক্সান্ডার ইয়াবলোনস্টেভ এবং তাঁর কো-পাইলট আলেক্সান্ডার কোছেতকভ, এই দুজনেরই ছিল দশ হাজার ঘণ্টা বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা৷ ২০০৮ সালে রাশিয়ার তৈরি সুপারজেট বিমানের প্রথম পরীক্ষামূলক উড়ানটিও এই পাইলটই চালিয়েছিলেন৷ সুতরাং, কোনোভাবেই বিমান চালকের কোনো দোষে বিমানটি ভেঙে পড়েছে, একথা মানতে চাইছেন না বিশেষজ্ঞরা৷ তাছাড়া অন্তিম যাত্রায় উড়ানের আগে বিমানটি বুধবার দুটি প্রদর্শনী উড়ানে উড়ে দেখিয়েছে এভিয়েশন মেলা বা উড়াল মেলায় আসা দর্শকদের৷ প্রথমবারের উড়ালের পর সুখোই সুপারজেট নির্বিঘ্নে অবতরণ করে হালিম পেডানাকুসুমা বিমানবন্দরে৷ সে সময়টা স্থানীয় এলাকায় মুসলিমদের প্রর্থনার বা নামাজের সময় হয়ে গিয়েছিল বলে বেশ কিছু যাত্রী সেই বিমানবন্দরে নেমে যান নামাজ আদা করতে৷ বাকি ৪৫ জন যাত্রী আরও কিছুক্ষণ নতুন বিমানে চড়ার মজা উপভোগ করতে চেয়েছিলেন৷ কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরেই দুর্ঘটনা নেমে আসে৷

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুশিলো বামবাং ইয়োধোইয়োনো এই বিমান দুর্ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন৷ সালাক পর্বতমালায় ধাক্বা খেয়েই বিমানটি ভেঙে পড়েছে বলে মন্তব্যও করেছেন তিনি৷ সম্পূর্ণ তদন্ত থেকেই হয়তো আগামীতে জানা যাবে কীভাবে ভেঙে পড়েছিল রাশিয়ার যাত্রীবাহী সুখোই৷

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়, (এএফপি, এপি)
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

Indonesien Trauer Flugzeug Absturz
অভিশপ্ত বিমানযাত্রীদের আত্মীয়-স্বজনরা মর্মাহতছবি: AP
Indonesien Flugzeug Absturz
উদ্ধার তৎপরতায় নামানো হয়েছিল সেনাবাহিনীকেছবি: AP
Indonesien Flugzeug Absturz
জাভার পশ্চিমে এই অঞ্চলেই দুর্ঘটনা ঘটেছেছবি: AP
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য