অস্থির থাইল্যান্ড
৩১ মার্চ ২০১২শনিবার দুপুরে ইয়ালা প্রদেশের ব্যস্ত এলাকাতে এই বোমা হামলার ঘটনা ঘটে৷ দক্ষিণাঞ্চলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল প্রামতো প্রোমিন জানান, তিনটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটেছে৷ প্রথম বোমাটি একটি গাড়ির মধ্যে রাখা ছিলো৷ বাকি দুটি রাখা ছিলো মোটরসাইকেলে৷ স্থানীয় গভর্নর দেথরাত সিমসিরি জানান, মাত্র একশ' গজের মধ্যেই বোমাগুলো বিস্ফোরিত হয়৷ বিস্ফোরণে গোটা এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়৷ টিভি ফুটেজে দেখা যায়, বিস্ফোরণের পর সেখানে আগুন নেভাতে দমকল বাহিনী কাজ চালাচ্ছে৷ গোটা এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে গেছে৷ এছাড়া থাই কর্তৃপক্ষের বম্ব স্কোয়াডের সদস্যরা ওই এলাকা পরিদর্শন করেছে৷
এদিকে ইয়ালার কেন্দ্রস্থল ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি জায়গায় বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে শনিবার৷ পুলিশ জানিয়েছে, পাত্তানি প্রদেশের মায়ে লান জেলাতেও বিচ্ছিন্ন আরও একটি মোটারসাইকেল বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে৷ এতে এক পুলিশ আহত হয়েছে বলে জানা গেছে৷ এছাড়া ইয়ালা থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে হাত ইয়াই নামক জায়গাতে একটি হোটেলেও বিস্ফোরণ ঘটে৷ প্রথমে পুলিশ একে বোমা বিস্ফোরণ বলে মনে করলেও পরে দেখা যায় হোটেলটির গ্যাস সরবরাহের পাইপলাইন ফুটো হয়ে যাওয়ায় এই বিস্ফোরণ হয়েছে৷
এদিকে এই ঘটনার জন্য স্থানীয় মুসলিম বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সন্দেহ করছে থাই কর্তৃপক্ষ যদিও এখন পর্যন্ত কেউ এই বোমা হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেনি৷ ইয়ালা প্রদেশের গভর্নর দেথরাত সিমসিরি বলেন, ‘‘আমরা এখনও নিশ্চিত নই কোন মুসলিম গ্রুপ এই ঘটনার পেছনে রয়েছে৷ তবে আমরা খতিয়ে দেখছি৷''
উল্লেখ্য, থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলের ইয়ালা প্রদেশটিতে মুসলমানদের সংখ্যা বেশি৷ এছাড়া আরও দুটি প্রদেশ পাত্তানি এবং নারাথিবাতও মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চল৷ এই অঞ্চলের মুসলমানরা দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে আসছে৷ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেখানে ক্রমেই স্বাধীনতার দাবিতে একাধিক গোষ্ঠী সক্রিয় হয়ে উঠেছে৷ এই পর্যন্ত সহিংসতায় থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে কয়েক হাজার বৌদ্ধ ও মুসলমান প্রাণ হারিয়েছে৷ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমন করতে এই সব অঞ্চলে জরুরি আইন জারি করেছে থাই সরকার৷
গত জানুয়ারি মাসে সেনাদের গুলিতে চারজন মুসলমান নিহত হয়৷ গত সপ্তাহে থাই সেনাবাহিনী ভুলবশত: তাদের গুলি করার কথা স্বীকার করেছে৷ এর আগে বিগত ২০০৪ সালে তাক বাই শহরে বিক্ষোভ চলাকালে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে সাত জন মারা যায়৷ এইসব কারণে থাইল্যান্ডের মুসলমি অধ্যুষিত দক্ষিণাঞ্চলে অস্থিরতা বাড়ছে৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম, এএফপি/এপি/রয়টার্স/ডিপিএ
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই